অবসাদ একটি মানসিক রোগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংজ্ঞা অনুযায়ী, সারাক্ষণ মনের মধ্যে দুঃখ ভাব এবং পছন্দের কাজে উৎসাহ হারিয়ে ফেলা, সেই সঙ্গে নিয়মিত জীবনযাত্রায় চলাচলে অক্ষমতা অবসাদের লক্ষণ। এসব লক্ষণ দুই সপ্তাহ বা তার বেশি স্থায়ী হলেই বুঝতে হবে আপনি অবসাদগ্রস্ত।নারী ও পুরুষের উপর অবসাদের প্রভাব ভিন্ন হয়। বিভিন্ন গবেষণায় বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। সম্প্রতি এই বিষয়ে প্রমাণ দিয়েছেন কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। তারা নারী-পুরুষের উপর অবসাদের প্রভাব ভিন্ন হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানিয়েছেন।
অবসাদের প্রভাব নিয়ে গবেষণায় যা প্রকাশিত হয়
কানাডার একটি সাময়িকীতে গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়। যেখানে গবেষকরা জানান, অবসাদে ভুগছেন এমন বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর সময় মস্তিষ্কের অবস্থা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় দেখা গেছে, পুরুষ ও নারীদের মস্তিষ্কের যে অংশে অবসাদের প্রভাব পড়ে, তা আলাদা দিকে অবস্থিত। তাই তাদের মধ্যে অবসাদের প্রভাবও ভিন্ন। এছাড়াও নারীদের মস্তিষ্কে বিশেষ একটি বায়োমার্কারের সন্ধানও পাওয়া গেছে। যা অবসাদের জন্য দায়ী।
নারী-পুরুষের অবসাদের এই ভিন্নতার কথা জানিয়েছেন লাভাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষক দলের প্রধান ক্যারলিন মেনার্ড।
গবেষক দলের প্রধান ক্যারলিন মেনার্ড জানান, পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে দ্বিগুণ অবসাদ দেখা যায়। নারীদের মধ্যে এর উপসর্গও আলাদা। পুরুষদের মধ্যে যে প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, নারীদের মধ্যে সেই প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না।
অধ্যাপক মেনার্ড আরও জানান, মৃত্যুর আগে অবসাদে থাকা নারীদের মস্তিষ্ক মৃত্যুর পর পরীক্ষা করা হয়। যেখানে দেখা যায় ক্লডিন-৫ নামে একটি প্রোটিনের অভাবেই মস্তিষ্কের একটি বিশেষ অংশে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এই প্রোটিন পুরুষদের মস্তিষ্কের যে অংশে থাকে, নারীদের মস্তিষ্কের সেই অংশে থাকে না।‘
‘অবসাদের ক্ষেত্রে পুরুষ ও মহিলাদের মস্তিষ্কে এটা অন্যতম প্রধান পার্থক্য। যার ফলে মেজাজ, উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণ এবং আত্ম উপলদ্ধিও আলাদা হয়।'
সূত্র: দ্য ওয়াল