• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ক্যানসার শনাক্তে দেরি হলে মৃত্যুও হতে পারে : ডা: ঈষিকা নাজনীন


নাইস নূর
প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২২, ০২:৩১ পিএম
ক্যানসার শনাক্তে দেরি হলে মৃত্যুও হতে পারে : ডা: ঈষিকা নাজনীন

চিকিৎসা বিজ্ঞান আধুনিক হচ্ছে দিন দিন। তবুও ক্যানসার মানুষের কাছে এখনও আতঙ্ক। প্রাথমিক ধাপে রোগ ধরা পরলে ঝুঁকি কম। কিন্তু দেরি হলেই ক্যানসার নিরাময় করা খুব সহজ হয় না। বর্তমানে মুখের ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এ রোগের কারণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সম্পর্কে  সংবাদ  প্রকাশ-কে পরামর্শ  দিয়েছেন রাজধানীর এম এইচ শমরিতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ডেন্টটিস্ট্রি এন্ড ডেন্টাল পাবলিক হেলথ বিভাগের প্রভাষক ডা: ঈষিকা নাজনীন। সাক্ষাতকার নিয়েছেন নাইস নূর। 

সংবাদ প্রকাশ : মুখের ক্যানসারের অন্যতম কারণ কী?

ডা: ঈষিকা নাজনীন : তামাক সেবন, ধূমপান, ধোঁয়াবিহীন তামাক (নাশক বা চিবানো তামাক), অ্যালকোহল এবং অতিরিক্ত সূর্যালোক এক্সপোজার, বিপরীতমুখী ধূমপান এবং হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি)-এসব কারণে মুখের ক্যানসারের সৃষ্টি হতে পারে।

সংবাদ প্রকাশ : মুখের ক্যানসারের চিকিৎসা তো ব্যয়বহুল। কীভাবে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে  হবে?

ডা: ঈষিকা নাজনীন : এটা ঠিক, খুবই ব্যয়বহুল এবং সাধ্যের মধ্যে কম। মুখের ক্যানসার সনাক্তকরণে দেরি হলে মৃত্যুর সম্ভাবনাও বেশি থাকে। তাই মৃত্যুহার কমানো এবং নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য  প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার উপর নজর দিতে হবে। প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং তৃতীয় ধাপে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা শ্রেণিবদ্ধ করা  যেতে পারে। 

রোগের ধ্বংসাত্মক প্রভাব, ঝুঁকির কারণ, নিরাময়যোগ্যতা সম্পর্কে সর্বজনীন নিশ্চিতকরণ ,মুখের ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়ক। তাই স্ক্রিনিং কৌশল এবং এর সুবিধার ভূমিকা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

সংবাদ প্রকাশ : সচেতনতা বাড়াতে করণীয় কী?

ডা: ঈষিকা নাজনীন :  সরকারি, বেসরকারি এবং ডেন্টাল সার্জনদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সচেতনতার ব্যবস্থা করতে হবে বলে আমি মনে করি। 

সংবাদ প্রকাশ : প্রতিরোধ করার কোনও উপায় আছে কী?

ডা: ঈষিকা নাজনীন : না, মুখের ক্যানসার প্রতিরোধ করার প্রমাণিত কোনও  উপায় নেই। তবে ঝুঁকি কমানো সম্ভব। এজন্য তামাক সেবন, অ্যালকোহল পান থেকে বিরত থাকতে হবে। চিকিৎসকের কাছে অবশ্যই নিয়মিত যেতে হবে। প্রাথমিকভাবে দাঁতের পরীক্ষার  অংশ হিসাবে চিকিৎসক রোগীর পুরো মুখের অস্বাভাবিক জায়গাগুলো পরিদর্শন করবেন। যা মুখের ক্যান্সার বা প্রাক- ক্যানসারজনিত পরিবর্তনগুলো নির্দেশ করতে পারে।

সংবাদ প্রকাশ : কীভাবে একজন চিকিৎসক মুখের ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারেন? 

ডা: ঈষিকা নাজনীন : একজন ডেন্টিস্ট বা বিশেষজ্ঞ রোগীর কোনও অস্বাভাবিকতা আছে কিনা এজন্য মুখ, ঘাড়, ঠোঁট, জিহ্বা, থাইরয়েড গ্রন্থি, লালা গ্রন্থি এবং লিম্ফ নোড পরীক্ষা করবেন। যদি একজন রোগীর অপসারণযোগ্য কৃত্রিম দাঁত ( রিমুভেবল ডেনচার ) থাকে তাহলে পুরো মুখ পরীক্ষা করার জন্য কৃত্রিম দাঁত বের করে নিতে হবে। 

এরপর ডেন্টিস্ট রোগীর মুখগহবরে লাল ছোপ, সাদা ছোপ, দাগযুক্ত প্যাচ এবং আলসারের মতো অস্বাভাবিকতা খুঁজে দেখবেন। ভেঙে যাওয়া দাঁত বা দাঁতের কোনও ধাঁরালো অংশ মুখে আছে কি না তা পরীক্ষা করবেন এবং সেটা থেকে থাকলে অপসারণ করবেন। অস্বাভাবিক জায়গাগুলো দেখার জন্য বিশেষ রং অথবা আলো ব্যবহার করা যেতে পারে। বিশেষ করে যদি ক্যানসার  হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।

একজন চিকিৎসক সাধারণত মুখের ক্যানসারের জন্য উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের তামাক ত্যাগ করার বা অস্বাস্থ্যকর খাবার কিংবা পানীয় থেকে দূরে থাকার পরামর্শই সর্বপ্রথম দিয়ে থাকেন।

সংবাদ প্রকাশ : সবশেষে এর চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে চাই।

ডা: ঈষিকা নাজনীন : একটি  মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি পদ্ধতিতে এর চিকিৎসা করতে হবে। ডেন্টাল প্র্যাকটিশনার, কেমোথেরাপি অনকোলজিস্ট, সার্জন, পুষ্টিবিদ এবং রেডিয়েশন অনকোলজিস্টদের সমন্বিত প্রচেষ্টায় রোগী সুস্থ হতে পারে। চিকিৎসার বিকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে অস্ত্রোপচার, রেডিওথেরাপী এবং কেমোথেরাপি। এছাড়াও প্রফাইল্যাকটিক সার্জারি করা যেতে পারে।

Link copied!