সদ্য পদত্যাগ করা তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের সঙ্গে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মহির ‘অশ্লীল’ ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে সম্প্রতি। ওই ফোনালাপে তিনি মাহিকে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে তুলে এনে ধর্ষণের হুমকি দেন।
ফোনালাপ ফাঁসের পর সমালোচনার মুখে পড়েন মুরাদ হাসান। ক্রমাগত প্রতিবাদের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। তবে একজন শিল্পীর সঙ্গে এমন ‘গর্হিত’ আচরণের প্রতিবাদে এখন পর্যন্ত মুখ খোলেনি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করা হয় চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের সঙ্গে। কিন্তু একাধিকবার ফোন দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য জয় চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলে বোঝা যায়, এ বিষয়ে তাদের ‘টনক’ নড়েনি।
জয়ের ভাষ্য, “সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানও ঢাকার বাইরে। যে কারণে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। কিছু দিনের মধ্যে কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে এবং আমরা বিষয়টি নিয়ে কথা বলব।”
এর আগে চলতি বছর মাদককাণ্ডে যখন চিত্রনায়িকা পরীমণি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তখন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সেসময় পরীমণির পাশে দাঁড়ায়নি শিল্পী সমিতি। বরং তার সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছিল। শুধু তাই নয়, সমিতির নেতারা পরীমণিকে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্যও করেন।
এদিকে ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর ওমরাহ করতে যাওয়া মাহিয়া মাহি সৌদি আরব থেকে ভিডিও বার্তায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, “আমি মাহি, মক্কার হারাম শরিফ থেকে বলছি। আপনারা জানেন, আমরা ওমরাহ পালন করতে এসেছি। এ জন্য ফোন রিসিভ করছি না। ইবাদত করতে এসেছি, সেটাই ঠিকমতো করতে চাই। যেটা বলার জন্য ভিডিওটা করেছি সেটা হচ্ছে, আমি সেদিনও ভীষণ বিব্রত ছিলাম। নিজের আত্মসম্মানে সেদিন কতটা আঘাত লেগেছে, সেটা আমি জানি আর আমার আল্লাহ জানেন এবং আজ আরও একবার আমি বিব্রত হলাম। নিজের কাছে ছোট হলাম, দেশবাসীর কাছে আরও একবার ছোট হলাম।”
ওই অশালীন ফোনালাপ প্রসঙ্গে মাহি বলেন, “ঘটনাটি দুই বছর আগের। আপনারা নিজে থেকে ভেবে দেখবেন, এ রকম ভাষা বা ব্যবহারের প্রত্যুত্তর আমার আসলে কী দেওয়ার ছিল? সেদিন আমার কিছু বলার ভাষা ছিল না। আমি সে জন্য কোনো প্রতিবাদ করিনি। যেভাবে পেরেছি, পাশ কাটিয়ে যাওয়া উচিত বলে মনে হয়েছে, আমি পাশ কাটিয়ে গেছি। এটা দুই বছর আগের একটা ঘটনা। বরাবরের মতো আমি আল্লাহর কাছে বলেছি, আমি কষ্ট পেয়েছি। যে কষ্ট দিয়েছেন, সেই ফল তিনি পেয়েছেন।”
পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দিয়ে মাহি আরও বলেন, “এই বিষয় নিয়ে এখান থেকে কথা বলার মানসিকতা আমার নেই। আমি দোষী কি না, আপনারা নিজের জায়গা থেকে চিন্তা করবেন। আমাদের জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমাদের ওমরাহ যেন আল্লাহ কবুল করেন। আমার কোনো দোষ ছিল না। আমি একটা পরিস্থিতির শিকার ছিলাম।”