বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন দেখতে এসে আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন চলচ্চিত্র অভিনেতা হিরো আলম। অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘এফডিসিতে আমার ওপর হামলা হয়েছে। নির্বাচন কেন্দ্র এলাকা থেকে টেনেহিঁচড়ে আমাকে পুলিশ বের করে দিয়েছে।’
শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে বিএফডিসিতে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট শুরু হয়েছে, যা চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ভোটার না হলেও দুপুরে এফডিসিতে ঘুরতে আসেন হিরো আলম। এ সময় সাধারণ দর্শকদের নজরে পড়েন এই অভিনয়শিল্পী। হাওয়াই মিঠাই রঙের ব্লেজার ও টি-শার্ট পরিহিত চিকন গড়নের বহুল আলোচিত হিরো আলমকে ঘিরে ধরেন অসংখ্য ভক্ত। একপর্যায়ে ভক্তদের ভিড়ে আটকে যান তিনি। সেলফি আর ফটোশুটে হিরো আলমের ভক্তদের ভিড়ে চাপা পড়েন। মানুষের ভিড় দেখে পুলিশ সেখানে লাঠিচার্জ করে। ওই সময়ই পুলিশের লাঠিচার্জে আঘাত পান হিরো আলম।
এফডিসির প্রবেশের পথে এ সময় ‘আলম ভাই, আলম ভাই’ ধ্বনিতে রাজপথ মুখরিত হয়ে ওঠে। এত মানুষের ভিড়ে হিরো আলমকে অসহায়ের মতো এদিক-সেদিক তাকাতে দেখা যায়। এ সময় কারওয়ান বাজার থেকে হাতিরঝিলমুখী রাস্তায় যানজট লেগে যায়। ভিড় ক্রমেই বাড়তে থাকায় বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরে আসে।
এফডিসির সামনে কর্বত্যরত পুলিশের একাধিক কর্মকর্তারা বলেন, “হিরো আলম যে অভিযোগ করেছে সেটি ভিত্তিহীন। একটি বিশৃঙ্খলা হচ্ছিল, পুলিশের পক্ষ থেকে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছে।”
এর আগে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনী প্রচারণায় হিরো আলমকে ঘিরে বিতর্ক চলছিল। সমিতির সদস্য না হয়েও ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলের হয়ে জোরেশোরে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন তিনি।
ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে হিরো আলম ইস্যুতে মিশা সওদাগর বলেছিলেন, ‘পেশাগত অভিনয়শিল্পীদের সদস্য হতে বাধা নেই।’
সেই জবাবে সব সময় ইউটিউবে সরব হিরো আলম বলেন, “আমার যোগ্যতার কোনো ঘাটতি নেই।”
হিরো আলম আরও বলেন, ‘‘বাংলাদেশের কোনো নাগরিক অপরাধে জড়িত না থাকলে এবং আমাদের ক্রাইটেরিয়া অনুযায়ী পাঁচটি ছবিতে উল্লেখযোগ্য চরিত্রে অভিনয় করতে হবে। এই শর্ত যে পূরণ করতে পারবে সে ভোটার হতে পারবেন।’’
কাজের অভিজ্ঞতার ঝুলি তুলে ধরে পরিচালক সমিতির সদস্য হিরো আলম তার আক্ষেপের কথা জানান। হিরো আলম বলেন, ‘‘আমার ৫টি সিনেমা কমপ্লিট হয়েছে। সেগুলো হলো মার ছক্কা, সাহসী হিরো আলম, টোকাই, বউ জামাইয়ের লড়াই, নষ্ট আর কষ্ট।’’
নির্বাচনে কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেল থেকে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন একুশে পদকপ্রাপ্ত চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। এই প্যানেল থেকে সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থী হয়েছেন চিত্রনায়িকা নিপুণ।
অপর দিকে মিশা-জায়েদ প্যানেল থেকে সভাপতি পদে প্রার্থী খলচরিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা মিশা সওদাগর। এই প্যানেলে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী চিত্রনায়ক জায়েদ খান। এর আগে দুইবার এই প্যানেল শিল্পী সমিতির প্রতিনিধিত্ব করেছে।
এবার নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করছেন পীরজাদা হারুন। তার সঙ্গে থাকছেন বি এইচ নিশান ও বজলুর রশীদ চৌধুরী। আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে থাকছেন পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান।