• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

মমতাজউদ্দীন আহমদ নাট্যজন পুরস্কার পেলেন মামুনুর রশীদ


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২২, ০৫:১৭ পিএম
মমতাজউদ্দীন আহমদ নাট্যজন পুরস্কার পেলেন মামুনুর রশীদ

বাংলা একাডেমি প্রবর্তিত ‘মমতাজউদ্দীন আহমদ নাট্যজন পুরস্কার ২০২২’ পেয়েছেন বিশিষ্ট নাট্যকার, অভিনেতা ও নাট্যপরিচালক মামুনুর রশীদ।

বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে পুরস্কারের খবরটি নিশ্চিত করেন মঞ্চ অভিনেত্রী জ্যোতি সিনহা।

পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি জানিয়ে সংবাদ প্রকাশকে মামুনুর রশীদ বলেন, “এখন বয়স হয়েছে। জীবনের আনন্দও অনেক কমে গেছে। পুরস্কার পেলে তো আনন্দ হবেই। এটা তো একধরনের খুশি। সব মিলিয়ে ভালোই লাগছে।”

এর আগে ২০২১ সালে মমতাজউদ্দীন আহমদ নাট্যজন পুরস্কার পান ধর্মান্ধতাবিরোধী নাটক রচয়িতা অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকী। ২০২০ সালে এই পুরস্কার পান জনপ্রিয় অভিনেতা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর।

মামুনুর রশীদকে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের মঞ্চ আন্দোলনের পথিকৃৎ বলা হয়। নাট্যকলায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০১২ সালে তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন। ১৯৮২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেলেও স্বৈরশাসনের প্রতিবাদ স্বরূপ তিনি পুরস্কারটি প্রত্যাখ্যান করেন।

১৯৪৮ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতির পাইকড়া গ্রামের মাতুলালয়ে মামুনুর রশীদের জন্ম। বাবা হারুনুর রশীদ ডাক বিভাগে সরকারি চাকরি করতেন। সেই সুবাদে দেশের বিভিন্ন জেলার স্কুল-কলেজে লেখাপড়া করেছেন। ঢাকা পলিটেকনিক থেকে পুরকৌশল বিভাগে ডিপ্লোমা করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বিএ ও এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।

১৯৬৭ সালে তিনি তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে টেলিভিশনের জন্য নাটক লিখতে শুরু করেন, যার বিষয়বস্তু ছিল মূলত পারিবারিক। সেসময় কমেডি নাটকও তিনি লিখতেন। নাট্যশিল্পের প্রতি তাঁর প্রকৃত ভালোবাসা শুরু হয় টাঙ্গাইলে নিজ গ্রামে যাত্রা ও লোকজ সংস্কৃতির সঙ্গে নিবিড় পরিচয়ের সূত্র ধরে। যাত্রার অভিনয় অভিজ্ঞতা তাঁর নাট্যভাবনাকে খুবই প্রভাবিত করেছিল।

১৯৭১ সালে তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন এবং জড়িত হন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সঙ্গে। মুক্তিযুদ্ধকালীন তিনি তাঁর প্রথম রচিত নাটক ‘পশ্চিমের সিঁড়ি’ কলকাতার রবীন্দ্রসদনে মঞ্চায়নের চেষ্টা করেন; কিন্তু এর আগেই ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীনতা অর্জন করায় নাটকটি আর তখন অভিনীত হয়নি। পরে নাটকটি ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে অভিনীত হয়। সেই সময়টাও তাঁর নাট্যচর্চায় প্রতিফলিত হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। মুক্তিযুদ্ধের পর শুরু হয় মামুনুর রশীদের আরেক নাট্যসংগ্রাম ‘মুক্ত নাটক আন্দোলন’। ১৯৭২ সালে কলকাতা থেকে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে তিনি তৈরি করেন ‘আরণ্যক নাট্যদল’। তিনি টিভির জন্যে অসংখ্য নাটক লিখেছেন এবং অভিনয় করেছেন।

মামুনুর রশীদ নাটক রচনা ও নির্দেশনার পাশাপাশি অসংখ্য নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে—মনপুরা, খাঁচা, মৃত্তিকা মায়া, কিত্তনখোলা,শঙ্খচিল, ভূবন মাঝি, গোর ও স্ফুলিঙ্গ।

Link copied!