• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫

নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২২, ০৬:১৫ পিএম
নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় গাড়িচাপায় এক নারীর নিহতের ঘটনার পর নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

রোববার (৪ ডিসেম্বর) টিএসসি সংলগ্ন সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ইনিস্টিটিউটের কয়েকশ শিক্ষার্থী অংশ নেন।

রাজু ভাস্কর্য থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করা হয়। এরপর মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।

এসময় মুখ ও চোখ কালো কাপড়ে বেঁধে এক মিনিট নিরবতা পালন করে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে প্রতীকী বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।

কর্মসূচিতে ‘দাবি মোদের একটাই নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই’, ‘অনিয়মের ঠাঁই নাই’, ‘নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই’, ‘ক্যাম্পাসে রক্ত ঝরে, প্রশাসন কী করে?’, ‘বিবেককে প্রশ্ন করি, এবার যদি আমরা মরি’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। সমাবেশ থেকে শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থে নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে ১১ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়।

তাদের দাবিগুলো হলো—

১. বিশ্ববিদ্যালয়ে সব যানবাহনের গতিসীমা নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ, শব্দদূষণ প্রতিরোধে ব্যবস্থা ও শাস্তির বিধান নিশ্চিত করা।

২. রুবিনা আক্তার হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে প্রশাসনের সর্বোচ্চ সমর্থন ও সহযোগিতা আদায় করা।

৩. ক্যাম্পাসে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে প্রধান প্রবেশদ্বারগুলোতে দ্রুত চেকপোস্ট বসানো ও গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা।

৪. বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শুধু নিবন্ধিত রিকশা চলাচল এবং রিকশাচালকদের জন্য ইউনিফর্ম ও ভাড়ার চার্ট প্রস্তুত করা।

৫. মাদকাসক্ত ও ভবঘুরে ব্যক্তিদের ক্যাম্পাস থেকে স্থায়ী উচ্ছেদ করা।

৬. ভ্রাম্যমাণ দোকানের জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ ও প্রশাসন কর্তৃক যথাযথ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত করা এবং ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্ন রাখতে ন্যূনতম ৩০০টি ডাস্টবিন স্থাপনের ব্যবস্থা করা।

৭. প্রথমবর্ষ থেকে সব শিক্ষার্থীর আইডি কার্ড দেওয়া এবং ক্যাম্পাসের কিছু স্থানে সংরক্ষিত প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা।

৮. সম্পূর্ণ ক্যাম্পাসকে সিসিটিভির আওতায় আনা এবং ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন করা।

৯. প্রক্টর অফিসে জমে থাকা সব অভিযোগ নিষ্পত্তি করা।

১০. নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রক্টোরিয়াল অফিসের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।

১১. নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিগুলো বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা।

দাবি আদায়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানকে স্মারকলিপি দিয়ে এক সপ্তাহের সময় বেঁধে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।

মূল সড়কগুলো নিয়ন্ত্রণে নেয় শিক্ষার্থীরা

বিক্ষোভ শেষে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ক্যাম্পাসের কয়েকটি প্রবেশমুখে বাঁশের ব্যারিকেড বসিয়ে দেয়। ক্যাম্পাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় এমন কারও গাড়ি তারা ক্যাম্পাসের ভেতর ঢুকতে দেয়নি। হ্যান্ড মাইক দিয়ে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা করছে, টিএসসিতে কোনো বহিরাগত থাকতে পারবে না। আজকের টিএসসি হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য।

এসময় এলাকাগুলো অনেকটা যানবাহন শূন্য দেখা যায়।

এর আগে, গত শুক্রবার বিকালে রুবিনা আক্তার মোটরসাইকেলে করে হাজারীবাগ যাওয়ার পথে শাহবাগ থানা পার হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলামের মাজার এলাকায় এলে একটি প্রাইভেটকার পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে রুবিনা আক্তার গাড়ির নিচে চাপা পড়েন। এ সময় গাড়ির বাম্পারে তার পোশাক আটকে যায়।

পরে ওই চালক গাড়ি না থামিয়ে রুবিনাকে নিয়েই বেপরোয়া গতিতে টিএসসি হয়ে নীলক্ষেতের দিকে যেতে থাকেন। এরপর সাধারণ জনতা নীলক্ষেত মোড়ে ঢাবির মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ এলাকায় গাড়িটি আটকিয়ে রুবিনাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে তিনি মারা যান।

Link copied!