জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ভর্তির আড়াই মাস পেরিয়ে গেলেও প্রথম বর্ষের (১৮তম আবর্তন) শিক্ষার্থীরা আইডি কার্ড এমনকি আইডি নম্বরও পাননি। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা প্রায় আড়াই মাস আগে ২০২২-২৩ সেশনে ভর্তি হলেও এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ডের মূল কপি হাতে পাননি। চলতি বছরের ৩ সেপ্টেম্বর থেকে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হলেও এখনও তাদের আইডি কার্ড সরবরাহ করা হয়নি। প্রথম সেমিস্টার শেষের পথে থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড হাতে না পাওয়ায় হতাশ শিক্ষার্থীরা।
সমাজকর্ম বিভাগের সেলিম ভূইয়া নামের এক শিক্ষার্থী অভিযোগ জানিয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড না থাকায় বাসে হাফ পাশ দেওয়া যায় না। আমাদের এতো দিন হয়ে গেলো, এখনও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের আইডি কার্ড হাতে দিতে পারলো না। এটা এই বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে খুব কষ্টের একটা বিষয়।
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান মুনিয়া বলেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি খুবই খারাপ। এই সময়ে অন্তত আইডি কার্ডটা থাকলে আমাদের কিছুটা হলেও রেহাই মিলতো।
সমস্যার কথা উল্লেখ করে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সালসাবিল ইসলাম প্রত্যাশা বলেন, অবরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বাস চলে না। আমাদের লোকাল বাসে আসতে হয়। সেক্ষেত্রে আইডি কার্ডটার প্রয়োজনীয়তা আমরা অনুভব করি।
জানা যায়, বোর্ড বৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সোমবারের (১৩ নভেম্বর) মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ নির্ধারিত ফরমটি জমা দিতে বলা হয়েছে। তবে ফরমটিতে আইডি নম্বরের তথ্য চাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।
আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী তিথী ইসলাম বলেন, অবরোধের মাঝে বৃত্তির কাগজ জমা দিতে এসেছি। আইডি কার্ড বা নম্বর না থাকায় ফ্রম ফিলাপ করতে পারিনি। এখন বিভাগে জমা দিয়ে এসেছি। আইডি কার্ডটা পেলে অনেক সুবিধা হতো।
জানা যায়, বিগত বছরগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ড প্রিন্টের কাজটি করতো রেজিস্ট্রার দপ্তর। তবে এখন আইটি সেলকে এই দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি সেলের এক কর্মকর্তা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড প্রিন্টের কাজ এখন আমরা করি। আগে রেজিস্ট্রার দপ্তর করতো। তবে রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে অনুমতি সাপেক্ষে নোটিশ না পেলে আমরা কাজ করতে পারবো না। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বলে দিলেই আমরা কাজ শুরু করতে পারবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্য্যের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। আশা করছি খুব শীগগির শিক্ষার্থীরা আইডি কার্ড নিজ নিজ বিভাগ থেকে সংগ্রহ করতে পারবে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, আইডি কার্ড পেতে দেরী হলেও আইডি নম্বরের তালিকা খুব দ্রুতই একাডেমিক শাখা থেকে প্রত্যেক বিভাগ এবং ইন্সটিটিউটে পাঠানো হবে। আইটি সেলের কাজ শেষ হলেই দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের হাতে আইডি কার্ড পৌঁছে যাবে। বৃত্তির কাগজপত্রের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শাখায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জানানো হয়েছে।