আগামীকাল ২৩ আগস্ট (মঙ্গলবার)। প্রতিবছর এ দিনটিকে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এ দিবসটি পালন করবে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সেই সঙ্গে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস বন্ধ থাকবে। এদিন (২৩ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কালো ব্যাজ ধারণ করবেন।
বেলা ১১টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রশাসনিক ভবনে প্রফেসর আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
একই দিন রাত ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এম আকাশের সভাপতিত্বে এবং অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় অন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দিবসটির ওপর আলোচনায় অংশ নেবেন।
২০০৭ সালের ২০ আগস্ট বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ এবং লোকপ্রশাসন বিভাগের ছাত্রদের মধ্যে ফুটবল খেলা চলছিল। ওই খেলাকে কেন্দ্র করে উপস্থিত ছাত্র ও সেনা সদস্যদের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।
খেলার মাঠেই শিক্ষার্থীদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালায় উপস্থিত সেনাসদস্যরা। ২১ আগস্ট নির্যাতনের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের শিক্ষার্থী। স্বতঃস্ফূর্তভাবে তারা বিক্ষোভ করতে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। তখন তাদের ওপর আক্রমণ চালায় পুলিশ। ২২ আগস্ট এই আন্দোলন গোটা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ে।
এ প্রেক্ষিতে তৎকালীন সেনা সমর্থিত সরকার ২২ আগস্ট সান্ধ্য আইন জারি করে এবং ওই দিন সন্ধ্যার মধ্যেই ঢাবির আবাসিক ছাত্র-ছাত্রীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ২৩ আগস্ট রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষক এবং আটজন ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে নির্যাতন চালানো হয়।
ধীরে ধীরে গ্রেপ্তারদের মুক্তির আন্দোলনও বেগবান হতে থাকে। পরে আরও দুটি ব্যানারে ছাত্রবন্ধু ও নির্যাতন প্রতিরোধ ছাত্র আন্দোলন ছাত্র-শিক্ষক মুক্তির আন্দোলনে গতির সঞ্চার করেছিল। ছাত্র-শিক্ষকদের মুক্তি আন্দোলনের কাছে হার মানে সেনা সমর্থিত সরকার। বাধ্য হয়ে গ্রেপ্তার ছাত্র-শিক্ষকদের মুক্তি দেওয়া হয়। পরের বছর থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার ২৩ আগস্টকে কালো দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।





































