• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

১৬৯২ জনের বিরুদ্ধে মামলা, ৪ গ্রাম জনশূন্য


জামালপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২২, ০৩:৩৪ পিএম
১৬৯২ জনের বিরুদ্ধে মামলা, ৪ গ্রাম জনশূন্য

জামালপুরের বকশীগঞ্জে নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনায় ৯২ জনসহ অজ্ঞাতনামা ১ হাজার ৬৯২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এতে চারটি গ্রাম জনশূন্য হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) বকশীগঞ্জ থানার এসআই আবু শরিফ বাদী হয়ে মামলা করেন।

মামলার প্রধান আসামি মেরুরচর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোয়ার হোসেন হক। বকশীগঞ্জ থানার এসআই মামলার বাদী আবু শরীফ মামলায় উল্লেখ করেছেন, ৫ জানুয়ারি উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়নের মেরুরচর হাসেন আলী উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ চলছিল।

একপর্যায়ে মেরুরচর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোয়ার হোসেন হকের নেতৃত্বে একদল সমর্থক কর্তব্যরত পুলিশের ওপর হামলা করে। একই সময় হামলাকারীরা চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোয়ার হোসেন হকের নির্দেশে ব্যালট বাক্স ছিনতাই করার চেষ্টা করে। হামলাকারীরা পুলিশের ওয়াকিটকি ছিনতাই করে নেন। হামলাকারীরা পুলিশের একটি পিকআপভ্যান পুড়িয়ে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ পর্যায়ক্রমে মোট ১৬০টি বুলেট ও ৩২টি টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।

হামলায় বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম, মামলার বাদী এসআই আবু শরীফ, এসআই রাজু আহমেদ, এএসআই মজনু মিয়া, আশরাফুল মৃধা, কনেস্টেবল আতোয়ার রহমান, রঞ্জু শেখ, আব্দুল মজিদ, আব্দুল আলীম, শাহজাহান, শাহিন, সুজন মিয়া, আলাল উদ্দিন, রবিউল, আবু তাহের, রিফাত হোসেন, নায়েক মাজেদুল ইসলাম, আনসার পিসি সুমন মিয়া ও এপিসি আল মাহমুদসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৯ জন সদস্য গুরুত্বর আহত হন।

এ ব্যাপারে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোয়ার হোসেন হককে হুকুমের আসামি করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়েছে। মামলার বাদী বকশীগঞ্জ থানার এসআই আবু শরিফ। মামলায় সাতজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার আসামিদের সাতদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বকশীগঞ্জ থানার এসআই মো. আব্দুস সালাম। অন্যদিকে পুলিশের ভয়ে লোকজন গবাদিপশুসহ অন্যান্য মালামাল নিয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন প্রায় ১৫ হাজার মানুষ।

বর্তমানে মেরুরচর, ফকিরপাড়া, বাঘাডুবা ও ভাটি কলকীহারা গ্রাম শতভাগ পুরুষশূন্য। নারীদের উপস্থিতিও খুবই নগণ্য। অভিভাবকদের সঙ্গে শিশু ও বৃদ্ধরাও পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ৪ গ্রামের ১৫টি মসজিদে মুসল্লিও নেই। শুক্রবারের জুম্মার নামাজের সময় মসজিদগুলো ছিল ফাঁকা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নেই। গ্রামগুলোতে সুনসান অবস্থা বিরাজ করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় অসুস্থতাজনিত কারণে মেরুরচর গ্রামে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তিদের দাফন কাফনে কেউ শরীক হওয়ার সাহস পাননি। ফলে বকশীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ তালুকদার ও পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগরের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফন করা হয়েছে।

জামালপুরের পুলিশ সুপার নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, “ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে অপরাধীদের শনাক্ত করা হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকলে কোনো লোক হয়রানির শিকার হবে না।”

Link copied!