ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন দোকানে হাতি দিয়ে অভিনব কায়দার তোলা হচ্ছে টাকা। প্রথম প্রথম স্বেচ্ছায় টাকা দিলেও প্রায় প্রতিনিয়ত একই ঘটনা ঘটায় অনেকেই বিরক্ত ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দোকানপাট ও রাস্তাঘাটে মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহনের গতিরোধ করে টাকা তোলাকে কেউ কেউ বলছেন চাঁদাবাজি।
রাস্তায় ঘুরছে বিশালদেহী হাতি। পিঠে বসা মাহুত। মাহুতের নির্দেশেই এক দোকান থেকে আরেক দোকানে যাচ্ছে হাতিটি। তারপর শুঁড় সোজা এগিয়ে দিচ্ছে দোকানির কাছে। শুঁড়ের মাথায় টাকা গুঁজে না দেওয়া পর্যন্ত শুঁড় সরাচ্ছে না হাতিটি। এভাবেই অভিনব কৌশলে হাতি দিয়ে চলছে চাঁদাবাজি। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা গেছে।
সরেজমিনে সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে গিয়ে দেখা যায়, ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন স্থানে হাতি দিয়ে টাকা তুলছেন মাহুতরা। সর্বনিম্ন ১০ টাকা থেকে শুরু করে দোকানের ধরণ অনুযায়ী ১০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে চাঁদা। শুধু দোকান নয়, সড়কে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহনের পথ রোধ করেও টাকা তুলতে দেখা যায় এই মাহুতদের।
ফরিদপুর শহরের ভাঙ্গা রাস্তার মোড় এলাকার একটি চায়ের দোকানে হঠাৎ একটি হাতি এসে শুঁড় এগিয়ে দিল। সঙ্গে সঙ্গে চায়ের দোকানদার ১০ টাকা হাতিটির শুঁড়ে গুঁজে দিলেন। টাকা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে ওই দোকানদার বলেন, “টাকা না দিলে যাবে না। তাছাড়া দেরি হলে অনেক সময় ভাঙচুর করে। এজন্য ঝামেলা হওয়ার আগেই টাকা দিয়ে দিলাম।”
হাতির মাহুত বলেন, “হাতির ভরণপোষণের জন্য সবাই খুশি হয়ে কিছু টাকা দেয়। কেউ খুশি হয়ে টাকা দিলে তা আবার চাঁদাবাজি হয় কীভাবে?”
শহরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান, মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন এলাকা থেকে হাতি নিয়ে এসে চাঁদা আদায় করা হয়। বিষয়টি দেখার কেউ নেই। প্রতিটি দোকান থেকে হাতি দিয়ে টাকা তোলা হয়। টাকা না দেওয়া পর্যন্ত দোকান থেকে হাতি সরানো হয় না। অনেক সময় মহিলা ক্রেতারা হাতি দেখে ভয় পান। এতে ব্যবসায়ের ক্ষতি হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, “হাতির কারণে অনেক সময় যানজটের সৃষ্টি হয়। দোকান থেকে চাঁদা ওঠানো শেষ হলে হাতিগুলো রাস্তায় নামে। হাতিগুলো চলন্ত গাড়ি থামিয়ে দেয়। এতেই যানজটের সৃষ্টি হয়।”
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমএ জলিল বলেন, “হাতি দিয়ে টাকা তোলার বিষয়ে এখনো কেউ আমাদের কিছু জানায়নি। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।“