দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলজুড়ে ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত সুন্দরবন। রূপ-বৈচিত্র্যে ঘেরা, নানা প্রজাতির বৃক্ষের সমারোহে সাজানো নয়নাভিরাম এই বনভূমি উপকূলবাসীর প্রাকৃতিক রক্ষাকবচ। গত কয়েক বছরে একের পর এক সুপার সাইক্লোনের আঘাত সয়ে উপকূলের মানুষকে রক্ষা করছে সুন্দরবন। কিন্তু সেই মানুষই এখন এই বন ধ্বংস করছে নিজেদের স্বার্থে।
উপকূলীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সিডিওর সহসভাপতি ওসমান গনি সোহাগ বলেন, সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকায় প্রায়ই বাঘের চামড়া, হরিণের মাংস উদ্ধার হয়। চোরা শিকারিরা নিয়মিত এসব প্রাণী শিকার করছে। এমনকি বিরল প্রজাতির পাখি, মাছ, ডলফিনও বাদ যাচ্ছে না।
তবে আশার কথা সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির খবর পাওয়া যাচ্ছে বনজীবীদের কাছ থেকে। বনে প্রবেশ করলেই যত্রতত্র শোনা যাচ্ছে বাঘের ডাক। দেখাও মিলছে প্রচুর বাঘের। গত প্রায় ১০ বছরে বনে দেখা যায়নি বাঘের এমন উপস্থিতি। বাঘের আশানুরূপ উপস্থিতি আশার সঞ্চার করেছে বন ও পরিবেশবাদীদের মাঝে।
সোমবার (২১ মার্চ) ‘বন সংরক্ষণের অঙ্গীকার টেকসই উৎপাদন ও ব্যবহার’ প্রতিপাদ্যে বাগেরহাটের মোংলায় আন্তর্জাতিক বন দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে সকাল ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে বের হওয়া বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে উপজেলা সম্মেলন কক্ষে বনবিভাগের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় বন দিবসের গোল টেবিল বৈঠক।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় (বাগেরহাট) বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, বন ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা বিভাগের বিভাগীয় (খুলনা) বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল, মোংলা উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আ. রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইব্রাহিম হোসেন, পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. শহীদুল ইসলাম হাওলাদার ও করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজাদ কবির।
বৈঠকে বন বিভাগ, উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন অংশগ্রহণ করেন।
বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল বলেন, “সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু হরিণ শিকার ও বিষ দিয়ে মাছ নিধন রোধ করা যাচ্ছে না। এটি অবশ্যই উদ্বেগের বিষয়।