লক্ষ্মীপুরে যৌতুক না পেয়ে এক গৃহবধূকে হাত-পা বেঁধে মাথা ন্যাড়া করে নির্মম নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে দাবিকৃত তিন লাখ টাকা না দেওয়ায় স্বামী, শাশুড়ি ও ননদ তাকে নির্যাতন করেন বলে ভুক্তভোগী ওই নারীর অভিযোগ।
নির্যাতনের ১৫ ঘণ্টা পর ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূকে স্থানীয় এলাকাবাসী ও স্বজনরা উদ্ধার করলেও মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। আটকও হয়নি কেউ। বর্তমানে ওই গৃহবধূ শ্বশুর বাড়ি এলাকার এক প্রতিবেশীর ঘরে আশ্রিত রয়েছে। পুলিশ বলছে, ঘটনার তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় এলাকাবাসী, ভুক্তভোগী নারী ও তার পরিবারের সদস্যরা জানান, সাড়ে ৩ বছর আগে ভোলার ইলিশা এলাকার বাসিন্দা আলমগীরের মেয়ের রুমার বিয়ে হয় লক্ষ্মীপুর সদরের চরমনি মোহন এলাকার বাসিন্দা কাঞ্চন মাঝির ছেলে মো. হাসানের সঙ্গে। বিয়ের কিছুদিন অতিবাহিত হলেই তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে বিভিন্ন সময়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন তার শাশুড়ি, ননদ ও স্বামী হাসান।
দরিদ্র বাবার যৌতুকের টাকা দেওয়ার সামর্থ্য না থাকায় নিরবে নির্যাতন সহ্য করে আসছিলেন রুমা। ১৩ ফেব্রুয়ারি (রোববার) রাতে দাবিকৃত তিন লাখ টাকা না দেওয়ায় স্বামী, শাশুড়ি ও ননদ তাকে হাত-পা বেঁধে ব্লেড দিয়ে মাথা ন্যাড়া করে ঘরে আটকে রাখার অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই নারী। পরে তার স্বামী বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলে কৌশলে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে বিষয়টি জানান রুমা। খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মনির হোসেন সজিবসহ এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে। বর্তমানে ওই নারী প্রতিবেশীর কাছে আশ্রিত রয়েছেন। এ ঘটনায় বিচার দাবি করেন ভুক্তভোগী, স্বজন ও এলাকাবাসী।
এদিকে যৌতুকের দাবিতে মাথা ন্যাড়া করে নির্যাতনের ঘটনা অস্বীকার করেন ভুক্তভোগীর ননদ পাখি বেগম বলেন, “পারিবারিক কলহের কারণে রুমার চুল কেটে দিয়েছে তার স্বামী।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য মনির হোসেন সজিব বলেন, “পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল থেকে গৃহবধূকে মাথা ন্যাড়া অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”
এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসীম উদ্দীন জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।