• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

যুবলীগ কর্মীকে প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩


বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২২, ০৫:৪৬ পিএম
যুবলীগ কর্মীকে প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

বগুড়ায় প্রেম সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে যুবলীগ কর্মীকে মিরাজ হোসেনকে (২২) হত্যার ঘটনায় কথিত প্রেমিকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার  করেছে পুলিশ।

বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বগুড়ার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী। হত্যাকাণ্ডের ১২ ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করেছে বলে জানান তিনি। 

ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একজনের বয়স ১৬ বছর হওয়ায় তার নাম পরিচয় প্রকাশ করা যাচ্ছে না। অপর দুইজন হচ্ছেন সোনাতলা থানার নওদাবগা গ্রামের মনু মিয়ার ছেলে তারেক রহমান (১৮) ও বগুড়া সদরের চকদুর্গা গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মিঠুন (২৮)।

সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, প্রেম নিয়ে বিরোধের জের ধরে মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বগুড়া পৌর পার্কে মিরাজ হোসেন (২২) নামের এক যুবককে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়। খুনের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত এবং গ্রেপ্তার করতে মাঠে নামে গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক টিম। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে জড়িতদের শনাক্তের পর একই রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা বিভিন্ন তথ্য দেন। গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, শহরের বাদুড়তলা এলাকার এক মেয়ের সঙ্গে মিরাজের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই মেয়ের সঙ্গে কিছুদিন আগে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয় সোনাতলা থানার নওদাবগা গ্রামের ১৬ বছর বয়সী ওই স্কুলছাত্রের। ওই মেয়ে মিরাজকে বাদ দিয়ে স্কুলছাত্রের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে।

গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে সুদীপ কুমার চক্রবর্তী আরও জানান, ওই মেয়ের ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড ছিল মিরাজের হাতে। যে কারণে মিরাজকে ছেড়ে যাওয়া প্রেমিকা নতুন প্রেমিকের সঙ্গে ম্যাসেঞ্জারে চ্যাটিং মিরাজ প্রতিনিয়ত দেখতে থাকেন। এসব দেখার পর মিরাজ ওই স্কুলছাত্রকে ফোনে বিভিন্ন রকমের হুমকি দিত। এক পর্যায়ে প্রেমিকার উপস্থিতিতে আলোচনা করতে চায় নতুন প্রেমিক ওই স্কুলছাত্র।

মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় বগুড়া পৌরপার্কে আসার সময় ওই স্কুলছাত্র তার বন্ধুর বড় ভাই মিঠুনকে সঙ্গে নিয়ে যায়। পার্কে মিরাজ ও তার আরেক বন্ধু নাজমুল আগে থেকেই বসে ছিল। কিন্তু ওই মেয়ে সেখানে না আসায় তাদের মধ্যে প্রেম নিয়ে বাকবিতণ্ডা এবং ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এ সময় মিঠুন পকেট থেকে চাকু বের করে মিরাজকে উপুর্যপরি আঘাত করে পালিয়ে যায়। মিরাজের সঙ্গে থাকা বন্ধু নাজমুল তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মিরাজের ভাই আতাউর রহমান জানান, মেয়েটি মিরাজের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে গাবতলী উপজেলার এক স্কুলছাত্রের প্রেমে পড়ে। তারপর থেকে সেই ছেলেটি ফেসবুক ও মুঠোফোনে বারবার মিরাজকে হুমকি দিয়ে আসছি।

মিরাজের বন্ধু আশিক জানান, যে মেয়েটির সঙ্গে মিরাজের সম্পর্ক ছিল তার নতুন প্রেমিক মীমাংসার জন্য তাকে পার্কে ডেকেছিল। নাজমুল ও মিরাজ সেখানে মীমাংসার জন্য যায়। হঠাৎ করেই ওই মেয়ের বর্তমান প্রেমিকসহ ৪-৫ জন মিরাজকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে।

জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ডাবলু বলেন, “আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। পাশাপাশি যেন মিরাজের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।”

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, মিরাজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মঙ্গলবার রাতেই নিহতের বড় ভাই আতাউর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের নামে মামলা করেছেন।

Link copied!