কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কাজিয়াতল গ্রামের একজন সফল উদ্যোক্তা কৃষক ইউনুস ভূঁইয়া। অদম্য ইচ্ছা ও মনোবলের জোরে তিনি ৬১ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন নানা জাতের ফল ও সবজিবাগান।
কুল, লেবু, মাল্টা, ফুলকপি, মরিচ, টমেটোর বাম্পার ফলন ফলিয়ে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন তিনি। এবার ২ হাজার ৫০০ বলসুন্দরী জাতের কুল, ৭ হাজার লেবু, সাথিফসল ও মাল্টাগাছ লাগিয়েছেন। তার বাগানে বরইয়ের চমৎকার ফলন রয়েছে। গাছের ডালে ডালে বলসুন্দরী কুল দুলছে। এ জাতের কুল দেখতে খুব সুন্দর। খেতে মিষ্টি, অধিক রসালো ও পুষ্টিগুণে ভরপুর।
বাগানের মালিক কৃষক ইউনুস ভূঁইয়া বলেন, “আমি বিদেশে ছিলাম। দেশে এসে বেকার হয়ে পড়েছিলাম। অনেক ভাবনা চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিই যে আর চাকরি করব না। এবার উদ্যোক্তা হয়ে নিজেই কিছু একটা করব। তাই আমার পরিত্যক্ত ৯ বিঘা জমির সঙ্গে আরও ৫২ বিঘা জমি লিজ নিয়ে একটি মাছের প্রকল্প তৈরি করি। মাছের ব্যবসা ভালো না হওয়ায় প্রজেক্টে বরই ও লেবুবাগান করার সিদ্ধান্ত নিই।”
ইউনুস ভূঁইয়া আরও বলেন “চারা রোপণের পর মুরাদনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাইন উদ্দিন স্যার সার্বক্ষণিক বাগানটির খোঁজখবর নিয়েছেন এবং গাছের পরিচর্যায় প্রয়োজন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। চারা রোপণের তিন মাস পর বাগানের প্রতিটি গাছে কুল এসেছে। কুল বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে হয় না। প্রতিদিন প্রচুর মানুষ বাগানে এসে কুল নিয়ে যায়। একটি গাছ ৪০ থেকে ৮০ কেজি কুল আসে। ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। এই বাগানে প্রতিদিন ১৫ জন কৃষিশ্রমিক কাজ করে। এছাড়া বাগানের নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক দুইজন লোক নিয়োজিত আছে। আমার বিশ্বাস ছিল সফল হব এবং হয়েছি।”
কুমিল্লা নগরীর রাজগঞ্জের ফল ব্যবসায়ী মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, “ইউনুস ভূঁইয়ার বলসুন্দরী দেখতে সুন্দর, খেতেও সুস্বাদু। তাই ক্রেতাদের কাছে আলাদা চাহিদা রয়েছে এ বরইয়ের।”
মুরাদনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাইন উদ্দিন আহমেদ বলেন, “কুমিল্লায় সম্ভবত এর চেয়ে বড় প্রজেক্ট নেই। বিস্ময়কর হলেও সত্য, চারদিকে পাড় বাঁধানো মাছের প্রজেক্ট এখন ফল আর সবজিতে ভরপুর। গাছে কুল এসেছে, বিক্রিও করা হচ্ছে।”