সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আনন্দ কমিউনিটি সেন্টারে বুধবার (১ ডিসেম্বর) হওয়ার কথা ছিল একটি বিয়ের অনুষ্ঠান। কিন্তু কমিউনিটি সেন্টারের একটি কক্ষ থেকে সকালে নারী বাবুর্চিসহ দুইজনের লাশ এবং আরও একজনকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধারের ঘটনা বদলে দেয় স্বাভাবিক চিত্র। বিয়ের উৎসবের বদলে পরিবেশ ওঠে বিষাদময়।
মৃতরা হলেন কানাইঘাট উপজেলার নয়াগ্রামের রহমত উল্লাহর ছেলে সুহেল আহমদ (৩৪) এবং ওসমানীনগর উপজেলার তাহিরপুর গ্রামের আকল আলীর মেয়ে সালমা বেগম (৩৫)। অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে বাবুর্চি কানাইঘাট উপজেলার ব্রাহ্মণগ্রামের বিলাল উদ্দিন আজিমকে (২৬)।
জানা গেছে, কানাইঘাট উপজেলার দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নের গাছবাড়ী বাজারের আনন্দ কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য আগের দিন মঙ্গলবার রাতে রান্নার কাজ করেন সালমা বেগমসহ তার সহকর্মীরা। রাতে কাজ শেষে কমিউনিটি সেন্টারেরই একটি কক্ষে ঘুমাতে যান তারা। বুধবার সকালে তাদের কোনো সাড়া-শব্দ না পেয়ে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে কক্ষ থেকে তিনজনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুহেল ও সালমাকে মৃত ঘোষণা করেন। আর গুরুতর অসুস্থ আজিমকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
জোড়া লাশ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সুহেলের স্বজনরা দাবি করেছেন, মুখে বিষ ঢেলে তাদের হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।
লাশ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কানাইঘাট সার্কেলের এএসপি আব্দুল করিম ও কানাইঘাট থানার ওসি (তদন্ত) জাহিদুল হক। পুলিশ ধারণা করছে, ছোট একটি কক্ষে তিনজন লাকড়ি ও মশার কয়েল জ্বালিয়ে শুয়ে থাকার কারণে ধোয়ায় অক্সিজেনের অভাবে শ্বাসকষ্টে ঘুমের মধ্যে তারা মারা গেছেন।
কানাইঘাট থানার ওসি (তদন্ত) জাহিদুল হক বলেন, কী কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে তা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসার পর বলা যাবে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, যে কক্ষে তারা শুয়েছিলেন তা ছোট ছিল। যার কারণে ধোঁয়া ঠিকমতো বের হতে পারেনি। তাই অক্সিজেনের অভাবে সুহেল আহমদ ও সালমা বেগমের মৃত্যু হতে পারে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। দুইজনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
