• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শিশু তাবাসসুমকে ধর্ষণ ও হত্যা : ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড


বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২২, ০৭:১৭ পিএম
শিশু তাবাসসুমকে ধর্ষণ ও হত্যা : ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড

বগুড়ায় আলোচিত শিশু তাবাসসুমকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে ৪ যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

রোববার (২৩ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে জেলা আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক নুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবির এই রায় দেন।

দণ্ডিতরা হলেন, বাপ্পি আহম্মেদ, কামাল পাশা শামিম রেজা ও লাভলু শেখ। তাদের সবার বাড়ি বগুড়ার ধুনট উপজেলার নছরতপুর গ্রামে।

এর আগে, ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় একই এলাকার সাত বছরের মাহি উম্মে তাবাসসুমকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের পর হত্যা করে গ্রামের বাঁশঝাড়ে ফেলে রাখা হয়। পরে খোঁজাখুজিঁর পর ওই রাতে তার মরদেহ উদ্ধার করে স্বজনেরা। এ ঘটনার পরপরই বগুড়ায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। পরে ওই বছরের ২৫ ডিসেম্বর পুলিশ ঘটনা জড়িত ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, তাবাসসুমের বাবা-মা ঢাকায় পোশাক কারখানায় কাজ করেন। সে ও তার বোন দাদির সঙ্গে বসবাস করত। ঘটনার দিনে গ্রামের ওয়াজ মাহফিল চলছিল। সেখানে মিষ্টি কিনতে কয়েকবার যায় তাবাসসুম। সন্ধ্যার পর আবার মিষ্টি কিনতে গেলে সেখানে বাপ্পী তাকে বাদাম কেনার লোভ দেখিয়ে মাহফিলের পাশের একটি কলেজের একটি কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে বাকি আসামিরা আগে থেকে অবস্থান করছিল। এরপর তারা ওই শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন।

এরপর অনেকক্ষণ নিখোঁজ থাকায় পরিবারের সদস্যরা তাবাসসুমকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। একপর্যায়ে রাত দেড়টার দিকে গ্রামের বাঁশঝাড়ে তাকে পাওয়া যায়। সেখান থেকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাবাসসুমকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় পরের দিন তার বাবা বেলাল হোসেন খোকন অজ্ঞাত নামে থানায় মামলা করেন। সেই মামলার তদন্তে ২০২০ সালের ২৫ ডিসেম্বর চার আসামি গ্রেপ্তার হয়। পরবর্তীতে ২৬ ডিসেম্বর বাপ্পী, শামিম ও লাভলু আদালতে জবানবন্দি দেন। আর কামাল পাশা জবানবন্দি দেন ২৯ তারিখে।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পিপি আশেকুর রহমান সুজন জানান, এ মামলায় ডিএনএ টেস্ট করা হয়। এতে তাবাসসুমের মরদেহে আসামিদের বীর্যের উপিস্থিতিও পাওয়া যায়। ধর্ষণ ছাড়াও ময়নাতদন্তে ওই শিশুকে শ্বাসরোধ করে হত্যারও প্রমাণ পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে পুলিশ ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর আদালতে মামলার পূর্নাঙ্গ চার্জশিট জমা দেয়।

আশেকুর রহমান সুজন বলেন, “মামলায় সব সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে রোববার রায় ঘোষণা করেন বিচারক। রায়ে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।”

রায় ঘোষণার পর নিহত তাবাসসুমের বাবা বেলাল হোসেন বলেন, “আসামিদের সবাইকে আমার মেয়ে চিনত। তাদের ভাই বলে ডাকত। এই রায়ে শান্তি পেলাম আমি।” 

Link copied!