• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ রমজান ১৪৪৫

১৩ জনের সিন্ডিকেটে সাবাড় ২৫ পাহাড়


কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২২, ০২:৩২ পিএম
১৩ জনের সিন্ডিকেটে সাবাড় ২৫ পাহাড়

কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ও খুরুশকুলে অন্তত ২৫টি পাহাড় কেটে শেষ করে দিয়েছে ১৩ জনের একটি সিন্ডিকেট। এক বছর ধরে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করছেন তারা।

চিহ্নিত ১৩ জনের সিন্ডিকেটটি ২১টি ডাম্প ট্রাক নিয়ে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করে সাবাড় করে দিচ্ছে একের পর এক পাহাড়।

অভিযোগ রয়েছে, বন বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের দুর্নীতিবাজ কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে ওই সিন্ডিকেট সদস্যদের গোপন চুক্তি থাকায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এমনকি পাহাড় কাটায় জড়িত সিন্ডিকেট সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও তা আমলে নেওয়া হয় না।

পাহাড় কাটা বন্ধে সংশ্লিষ্ট বন কর্মকর্তা ও সিন্ডিকেট সদস্যদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন মোর্শেদ আলম ও সিরাজুল ইসলাম নামের দুই ব্যক্তি। তারা বলেন, “এক বছরে বন বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে মৌখিকভাবে অসংখ্যবার অভিযোগ দিলেও কাজ না হওয়ায় লিখিত অভিযোগ দিতে বাধ্য হয়েছি।”

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এমন নির্লিপ্ততায় পাহাড় কাটা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে বলে মনে করেন পরিবেশবিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এনভায়রনমেন্ট পিপল’ এর প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ। তিনি বলেন, “এক বছরে পিএমখালী ও খুরুশকুলে ১৩ জনের একটি সিন্ডিকেটের হাতে শেষ হয়েছে ২৫টি পাহাড়। দিনে-রাতে ২১টি ডাম্প ট্রাক নিয়ে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে মামলা তো দূরের কথা, বাধাও দেয়নি বন বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তর। অথচ এক বছর আগে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছিল।

সূত্র জানিয়েছে, এক বছর আগে বন বিভাগের সাবেক কর্মকর্তাদের সাড়াশি অভিযান ও মামলায় এক প্রকার কোণঠাসা হয়ে পড়ে পাহাড় খেকো সিন্ডিকেটটি। ওই কর্মকর্তারা বদলির পর নতুন কর্মকর্তাদের কয়েকজনকে হাত করে সিন্ডিকেটটি। এরপর থেকে পাহাড়ের পর পাহাড় কেটে শেষ করে দিলেও সিন্ডিকেটের ১৩ সদস্যের বিরুদ্ধে একটি মামলাও হয়নি। যার কারণে তারা এখন বেপরোয়া।

অপরদিকে পরিবেশ অধিদপ্তরও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এমনকি সিন্ডিকেট সদস্যদের একচেটিয়া সুবিধা দিতে সিন্ডিকেটের বাইরে কেউ পাহাড় কাটলে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক অভিযান চালানো হয়।

অভিযোগের বিষয়ে পিএমখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা আবদুল জব্বার জানান, পাহাড় কর্তনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে, মামলাও দেওয়া হচ্ছে।

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, “পিএমখালীতে পাহাড় কাটার ঘটনা নজরে আসায় দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

অপর দিকে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা পিএমখালীতে পাহাড় কাটার ৫-৬টি স্পট পরিদর্শন করেছি। পাহাড় কর্তনকারীদেরও চিহ্নিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Link copied!