আয়তনের দিক দিয়ে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ ময়দান দিনাজপুরের গোর-এ শহীদে একসঙ্গে তিন লাখ মুসল্লি ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন।
রোববার (১০ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা শামসুল হক কাসেমী।
দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলাসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা জামাতে অংশগ্রহণ করেন। আরও অংশ নেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, গোর-এ শহীদ ঈদগাহ ময়দান ও মিনার পরিকল্পনাকারী জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, জেলা পরিষদের প্রশাসক আজিজুল ইমাম চৌধুরী, পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। নামাজ শেষে করোনা প্রাদুর্ভাব থেকে সবাইকে মুক্ত রাখা এবং দেশ ও জাতির জন্য দোয়া কামনা করা হয়।
এর আগে সকাল সাড়ে ৭টার আগে থেকেই ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা জায়নামাজ ও ছাতা নিয়ে মাঠে প্রবেশ করেন। এ সময় তাদেরকে তল্লাশি করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, “অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এক হাজার অস্ত্রধারী পুলিশ সদস্য মাঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করেছেন। পুরো মাঠটি নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল। ঈদের আগের একদিন থেকেই মাঠটি ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া মাঠে সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হয়।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গোর-এ শহীদ বড় ময়দানের আয়তন প্রায় ২২ একর। ২০১৭ সালে নির্মিত ৫২ গম্বুজের ঈদগাহ মিনার তৈরিতে খরচ হয়েছে তিন কোটি ৮০ লাখ টাকা। ঈদগাহ মাঠটি ঐতিহাসিক নিদর্শন ও মনোরম কৃতির সৌন্দর্য ও নান্দনিক হিসেবে নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। এই ৫০ গম্বুজের দুই ধারে ৬০ ফুট করে ২টি মিনার, মাঝের দুটি মিনার ৫০ ফুট করে। ঈদগাহ মাঠের মিনারের প্রথম গম্বুজ অর্থাৎ মেহেরাব (যেখানে ইমাম দাঁড়াবেন) তার উচ্চতা ৪৭ ফিট। এর সঙ্গে রয়েছে আরও ৪৯টি গম্বুজ। এছাড়া ৫১৬ ফুট লম্বায় ৩২টি আর্চ নির্মাণ করা হয়েছে। পুরো মিনার সিরামিক্স দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি গম্বুজ ও মিনারে রয়েছে বৈদ্যুতিক লাইটিং। রাত হলে ঈদগাহ মিনার আলোকিত হয়ে ওঠে।
২০১৭ সাল থেকেই প্রতিবারে এখানে ঈদের নামাজ আদায় করছেন দিনাজপুর জেলাসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা-উপজেলার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। তবে করোনার প্রকোপের ফলে গত দুই বছরে এই মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ায় চলতি বছরে ঈদুল ফিতরে নামাজ আদায় হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :