গার্ডার চাপায় নিহত পাঁচজনের মধ্যে চারজন তাদের গ্রামের বাড়িতে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন। মঙ্গলবার ( ১৬ আগস্ট) রাত ১১টায় জেলার মেলান্দহ উপজেলার আগপয়লা গ্রামে ঝরনা, তার দুই সন্তান জান্নাত ও জাকারিয়া এবং রাত ১২টায় ইসলামপুর উপজেলার ঢেংগারগড়ে ফাহিমার জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্তানে দাফন করা হয়। ফাহিমা ও ঝরনা আপন বোন। রাত ১০টার দিকে নিহতদের মরদেহ জামালপুরে তাদের নিজ নিজ গ্রামে এসে পৌঁছে।
আর আইয়ুব আলী হোসেনের (রুবেল) (৫৫) মরদেহ গ্রহণ করেন তার স্ত্রী সাহিদা খানম। আইয়ুব আলীর ভাই মো. ইয়াহিয়া বলেন, মরদেহ প্রথমে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে সাহিদার গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হবে। সেখানে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মরদেহ নেওয়া হবে তাদের গ্রামের বাড়ি মেহেরপুর সদরের ঘোড়ামারা রাজনগরে। সেখানেই আইয়ুব আলীকে দাফন করা হবে।
জামালপুর প্রতিনিধি জানান, গ্রামের বাড়িতে স্বজনসহ এলাকার শত শত মানুষ ভিড় করছিলেন। মরদেহগুলো পৌঁছাতেই পরিবারের সদস্যদের আহাজারি শুরু হয়।
নিহতের স্বজনরা জানান, ভাগ্নি রিয়া মনির বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) জামালপুরের মেলান্দহের আগপয়লা গ্রাম থেকে আশুলিয়া যান ঝরনা বেগম, তার স্বামী জাহিদ আকন্দ এবং তাদের সন্তান জাকারিয়া (৩) ও জান্নাত (৬)। শনিবার বিয়ে শেষে স্ত্রী-সন্তানদের রেখে বাড়ি ফিরে আসেন ইজিবাইক মিস্ত্রি জাহিদ। স্ত্রী ও সন্তানদের হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন জাহিদ আকন্দ।
ঝরনার স্বামী জাহিদ আকন্দ বলেন, ভাগ্নি রিয়া মনির বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনি স্ত্রী ও ছেলে মেয়েদের নিয়ে বৃহস্পতিবার ঢাকার আশুলিয়া যান। শনিবার আশুলিয়ায় বিয়ে সম্পন্ন শেষে স্ত্রী সন্তান রেখে তিনি বাড়িতে চলে আসেন।
ঝরনার স্বজন আব্বাস মিয়া বলেন, “সরকারের গাফিলতির কারণে অকালে এই তাজা প্রাণগুলো ঝরে গেল। আমরা তদন্তপূর্বক দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
কান্নাজড়িত কণ্ঠে জাহিদের মা জবেদা বেগম বলেন, “এর আগেও দুর্ঘটনায় আমার বড় ছেলেকে হারিয়েছি। আজ ছোট ছেলের স্ত্রী ও আদরের শিশুসন্তানদের চিরদিনের জন্য হারালাম। আমার হারাবার আর কিছু বাকি রইল না।”
ঝর্নার বাবা আব্দুর রশিদ বলেন, “দুর্ঘটনা নয়, আমার দুই মেয়ে আর দুই নাতি-নাতনিকে হত্যা করা হয়েছে। সরকারের কাছে আমি এর বিচার চাই।”
সোমবার বিকেলে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে উত্তরায় গার্ডার দুর্ঘটনায় নিহত হন পাঁচজন। এর মধ্যে ঝরনা বেগম, তার সন্তান জাকারিয়া এবং জান্নাতের গ্রামের বাড়ি জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার আগ পয়লা গ্রামে। আর ঝর্না বেগমের বড় বোন ফাহিমার বাড়ি ইসলামপুর উপজেলার লাউদত্ত গ্রামে। দুর্ঘটনায় সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যাওয়া নব দম্পতি হৃদয় হাসান ও রিয়া মনি গুরুতর আহতবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।








































