খুলনায় বহুল আলোচিত মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক খান ইবনে জামান হত্যা মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেকে ৩০ হাজার জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর পর খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাহমুদা খাতুন সোমবার (১ আগস্ট) এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন শেখ তৈয়েবুর রহমান ওরফে ইরান, অপূর্ব কুমার বিশ্বাস ও মো. সোহাগ শেখ। অপরদিকে এ মামলার অন্য আসামি আশুতোষ ব্যাপারীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট কে এম ইকবাল হোসেন।
আইনজীবীরা জানান, ২০০৮ সালের ১৩ অক্টোবর রাতে নগরীর খালিশপুরে নিজ বাড়িতে শ্বাসরোধ ও মাথায় আঘাত করে আওয়ামী লীগ নেতা খান ইবনে জামানকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তার দুই পা দড়ি দিয়ে এবং হাত একটি লুঙ্গি দিয়ে বাঁধা ছিল। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো. শাহাব উদ্দিন খান বাদী হয়ে ১৪ অক্টোবর অজ্ঞাত পরিচয় দুর্বৃত্তদের আসামি করে খালিশপুর থানায় মামলা করেন।
২০০৮ সালের ২১ অক্টোবর র্যাব সদস্যরা হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শেখ তৈয়েবুর রহমান ওরফে ইরান, অপূর্ব কুমার বিশ্বাস ওরফে অপু ও মো. সোহাগ নামে তিন যুবককে গ্রেপ্তার করে। তারা জামানকে হত্যা করে বলে ওইদিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
২০০৯ সালের ১৪ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির ইন্সপেক্টর নিখিল চন্দ্র মণ্ডল ওই তিনজনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে বলা হয়, খান ইবনে জামান চিরকুমার এবং সমকামী ছিলেন। তিনি জোরপূর্বক সমকামিতা করতে গেলে আসামিরা তাকে হত্যা করে।
২০০৯ সালের ৩ জুন মামলার বাদী মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজি পিটিশন দাখিল করেন। ওই বছরের ২৭ আগস্ট মুখ্য মহানগর হাকিম মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন।
২০১০ সালের ২২ আগস্ট মামলার অধিকতর তদন্ত শেষে তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির এসআই আবদুল গফুর চারজনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটভুক্ত আসামিরা ছিলেন শেখ তৈয়েবুর রহমান ওরফে ইরান, অপূর্ব কুমার বিশ্বাস ওরফে অপু, মো. সোহাগ ও আশুতোষ ব্যাপারী।





































