দুই মাস ধরে পানিবন্দী রয়েছেন ফরিদপুর পৌরসভার ব্রাহ্মণকান্দা এলাকার শতাধিক বাসিন্দা। পাশাপাশি একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মসজিদ প্রাঙ্গণ ও সড়কের কিছু অংশ পানিতে নিমজ্জিত থাকায় শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ফরিদপুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ব্রাহ্মণকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠও পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে দুই মাস ধরে। দূর থেকে দেখে মনে হবে কোনো ফসলি মাঠ। দুই মাস ধরে মাঠে অ্যাসেম্বলি করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কমে গেছে। স্কুলে আসা শিক্ষার্থীদেরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পানি থাকায় খেলাধুলা করতে পারছে না শিশুরা। পানি মাড়িয়ে আসতে গিয়ে শিশুরা চর্মরোগেও আক্রান্ত হচ্ছে।
এদিকে পানিবন্দী হয়ে রয়েছে ওই এলাকার অন্তত ৩০টি পরিবার। কোনো বাড়ির ভেতরে পানি রয়েছে। কোনো কোনো বাড়ির উঠান এবং কোনো কোনো বাড়ির রান্নাঘর পানিতে ডুবে আছে। ঘর থেকে বের হলেই পানি মাড়াতে হয়। জুতা-স্যান্ডেল হাতে নিয়া পানি মাড়িয়ে সড়কের শুকনা অংশে উঠতে হয় তাদের।
একটি মসজিদের প্রাঙ্গণও পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। নামাজ পড়তে মসজিদে পানি মাড়িয়ে যেতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে মুসল্লিদের। পাশাপাশি সড়কের ৫০০ মিটার অংশ পানিতে ডুবে আছে। সড়কে যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
ব্রাহ্মণকান্দা এলাকার বাসিন্দা বেলায়েত হোসেন বলেন, “প্রায় দুই মাস ধরে পানিবন্দী হয়ে রয়েছি আমরা। এই এলাকার ৩০টি পরিবার এখনো পানিবন্দী রয়েছে। ঘর থেকে বের হতে গেলে জুতা হাতে নিয়ে পানি পার হয়ে শুকনা অংশে যেতে হয়।”
আরেক বাসিন্দা আসলাম হোসেন বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর এই জলাবদ্ধতার সমস্যা। বাইপাস সড়ক হওয়ার কারণে জলাবদ্ধতার নিরসন হচ্ছে না। বৃষ্টির সময় বেশি সমস্যায় পড়তে হয়। এলাকাবাসীর চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
আরেক বাসিন্দা রওশন আহমেদ বলেন, এই এলাকায় একটি স্কুল ও একটি মসজিদের সামনের মাঠ পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এ ছাড়া একটি সড়কের ৫০০ মিটার পানিতে নিমজ্জিত। স্কুলে শিক্ষার্থীরা আসতে পারছে না। এলেও রিকশায় আসতে হয়। এ কারণে গরিব মানুষের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে পারছে না।
ব্রাহ্মণকান্দা মসজিদের ইমাম আব্দুল্লাহ মাহফুজ বলেন, দুই মাস ধরে মসজিদের সামনের অংশে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। মসজিদে নামাজ আদায় করতে আসা মুসল্লিদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
ব্রাহ্মণকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুন্নাহার বলেন, স্কুলের মাঠে প্রায় দুই মাস ধরে পানি রয়েছে। এ কারণে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কমে গেছে। জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষাকার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোসের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আরাফাত রহমান রাজিব জানিয়েছেন, ওই এলাকার ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিগুলো বালু দিয়ে ভরাট করায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জমি কেটে পাইপ দিয়ে পানি অপসারণের কাজ শুরু করা হয়েছে। দ্রুতই জলাবদ্ধতার নিরসন হবে।