ওয়েস্ট ইন্ডিজে পাকিস্তানের দারুণ জয়

সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২৫, ১০:৫১ এএম
ছবি : সংগৃহীত

টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের স্মৃতি টাটকা থাকতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে খেলতে নেমেছিল পাকিস্তান। ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করে ৪৯ ওভারে গুটিয়ে যাওয়ার আগে ২৮০ রানের সংগ্রহ পায় উইন্ডিজ।


লক্ষ্যটা পাকিস্তানের জন্য কতটা ‘কঠিন’, সেটা পরিসংখ্যানের দিকে নজর দিলে সহজেই বোঝা যাবে। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে এর আগে ওয়ানডেতে এর চেয়ে বেশি রান তাড়া করে পাকিস্তান ম্যাচ জিতেছিল মোটে দুটি। সে দুটি ম্যাচের একটি আবুধাবিতে (২০০৮ সালে ২৯৪ তাড়া করে জয়), আরেকটি ঘরের মাঠ মুলতানে (২০২২ সালে ৩০৫ তাড়া করে জয়)।  

কিন্তু ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে গিয়ে উইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডেতে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডটি ছিল ২৫৯ রানের। ১৯৯৩ সালে পোর্ট অব স্পেনে ক্যারিবীয়দের এ রান তাড়া করে জিতেছিল পাকিস্তান। উইন্ডিজের মাটিতে আজ রান তাড়ার নতুন রেকর্ডই গড়েছে পাকিস্তান।


শুরুতে ২৮১ রানের লক্ষ্য ‘পাহাড়সম’ মনে হলেও পাকিস্তান ম্যাচটা জিতে নিয়েছে সহজেই। ইনিংসের ৭ বল আর ৫ উইকেট হাতে রেখে স্বস্তির জয়ে ৩ ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান-বাবর আজমরা।

ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই ওপেনার ব্র্যান্ডন কিংকে (৪) হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শাহিন আফ্রিদির দারুণ এক ডেলিভারিতে বাবর আজমকে ক্যাচ দেন ডানহাতি এ ওপেনার।


তবে এভিন লুইস-ক্যাচি কার্টির দ্বিতীয় উইকেট জুটির ৭৭ রানে ঘুরে দাঁড়ায় উইন্ডিজ। ইনিংসের ১৫তম ওভারে কার্টিকে (৩০) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন সুফিয়ান মুকিম। এরপরও লুইস (৬০), শেই হোপ (৫৫), রোস্টন চেজের (৫৩) ফিফটি ও শেষ দিকে গুডাকেশ মোতির ১৮ বলে ৩১ রানের ঝড়ে ২৮০ রানের সংগ্রহ পায় উইন্ডিজ।

পাকিস্তানের হয়ে ৫১ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন শাহিন আফ্রিদি। আরেক পেসার নাসিম শাহ ৫৫ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছেন। এছাড়া সায়েম আইয়ুব, সুফিয়ান মুকিম ও সালমান আলী আগা একটি করে উইকেট নিয়েছেন।

রান তাড়ায় পাকিস্তানও শুরুতেই উইকেট হারায়। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের শেষ বলে দলকে ১৬ রানে রেখে বিদায় নেন ওপেনার সায়েম আইয়ুব (৫)। আরেক ওপেনার আবদুল্লাহ শফিকও ৩৩ বলে ২৯ রান করে বিদায় নেন।

৬৩ রানে দুই উইকেট হারালেও পাকিস্তানকে পথ হারাতে দেননি দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান রিজওয়ান ও বাবর আজম। এর মধ্যে বাবর ৪৭ রান করে আউট হলেও ফিফটি আদায় করে নিয়েছেন রিজওয়ান (৫৩)।

একটা পর্যায়ে পাকিস্তানের স্কোরবোর্ডে ১৮০ রানে ৫ উইকেট ছিল। হাতে ৫ উইকেট থাকলেও জয় থেকে তখন ৭৬ বলে ১০১ রান দূরে পাকিস্তান। পথ কিছুটা কঠিন হতে থাকে সফরকারীদের। তবে হাসান নেওয়াজ ও হোসাইন তালাতের ৭০ বলে অবিচ্ছিন্ন ১০৪ রানের জুটিতে ইনিংসের ৭ বল হাতে রেখেই ম্যাচ জেতে পাকিস্তান।

এক প্রান্তে হাসান নেওয়াজ ৫৪ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন। মজার বিষয়, আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে এটাই ছিল হাসান নেওয়াজের প্রথম ম্যাচ। আরেক প্রান্তে ৩৭ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৪১ রানে অপরাজিত থাকা তালান ওয়ানডে খেলতে নেমেছিলেন ৬ বছর পর! তাদের ব্যাটে ভর করেই ম্যাচটা জিতল পাকিস্তান।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২৮০ (লুইস ৬০, হোপ ৫৫, চেজ ৫৩; আফ্রিদি ৪/৫১, নাসিম ৩/৫৫)
পাকিস্তান: ২৮৪/৪ (নেওয়া ৬৩*, রিজওয়ান ৫৩, বাবর ৪৭; জোসেফ ২/৬৫, মোতি ১/৪২)
ম্যাচসেরা: হাসান নেওয়াজ
সিরিজ: পাকিস্তান ১-০ তে এগিয়ে