দলিল আছে তবে দখল নেই, এই জমি পেতে আপনাকে যা যা করতে হবে

সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৬, ২০২৫, ০৮:০৬ পিএম

বাংলাদেশে গোষ্ঠীগত বা সামাজিক সংঘাতের কারণ অনেকটা জমি। জমি দখল বা ভাগ বণ্টন অনেকটা হানাহানিতে রূপ নেয়। এমন অনেকে আছেন যাদের হাতে জমির দলিল রয়েছে, কিন্তু রেকর্ডে নাম নেই এবং বাস্তব দখলও নেই। 

বিশেষ করে দীর্ঘদিন দেশের বাইরে ছিলেন বা জমির হাল-হকিকতের খোঁজ রাখেননি এমন ব্যক্তিরা এ সমস্যায় পড়ে থাকেন। 

এই পরিস্থিতিতে প্রাথমিকভাবে প্রশ্ন উঠে- দলিল আছে কিন্তু দখল ও রেকর্ড না থাকলে জমি পাওয়া যাবে কি? 

তবে এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে আগে জানতে হবে আইনি প্রক্রিয়াগুলো কী এবং কীভাবে তা অনুসরণ করতে হয়।

মালিকানা প্রতিষ্ঠায় যা করতে হবে-

আইন অনুযায়ী, জমি ফিরে পেতে হলে দুটি ধাপ অতিক্রম করতে হয়: মালিকানা প্রমাণ করা ও দখল পুনরুদ্ধার করা।

আপনার হাতে দলিল থাকলেও যদি জমির নামজারি না হয়ে থাকে এবং রেকর্ডে অন্য কারো নাম থেকে যায়, তাহলে আদালতের মাধ্যমে আপনার মালিকানা প্রমাণ করতে হবে।

কোন আদালতে যাবেন

যদি সরকারি পরচা বা খতিয়ান প্রকাশের দুই বছরের মধ্যে রেকর্ড সংশোধন করতে চান, তাহলে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল (LST)-এ মামলা করতে হবে।

যদি দুই বছর পার হয়ে যায় বা আপনি রেকর্ড হওয়ার বিষয়টি জানতেন না, তখন সহকারী জজ আদালতে ‘ঘোষণামূলক মামলা’ করতে হবে।

এখানে উদ্দেশ্য হলো- আদালতের মাধ্যমে প্রমাণ করা যে, আপনি প্রকৃত মালিক, যদিও রেকর্ডে আপনার নাম নেই।

মালিকানা প্রমাণের পর দখল পুনরুদ্ধারের পদ্ধতি

একবার আদালতের মাধ্যমে মালিকানা প্রমাণ হয়ে গেলে এবং নামজারি সম্পন্ন হলে, পরবর্তী ধাপ হলো দখল পুনরুদ্ধার করা।

এ জন্য অনুসরণ করতে হবে ২০২৩ এর ধারা ৮, ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন। এই আইনের আওতায় জেলা প্রশাসকের অফিসে গঠিত ভূমি প্রতিকার আদালতে মামলা করতে পারবেন।

আবেদন প্রক্রিয়া:

•    আদালতের আদেশ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে।

•    ম্যাজিস্ট্রেট তদন্তের মাধ্যমে যাচাই করবেন আপনি প্রকৃত মালিক কি না।

•    যাচাই শেষে দখল বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারবেন।

দলিল থাকা মানেই জমি পাওয়ার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায় না। বরং সঠিক আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আপনি আপনার জমির মালিকানা ও দখল উভয়ই ফিরে পেতে পারেন। এজন্য প্রয়োজন যথাযথ কাগজপত্র, আদালতের নির্দেশনা ও আইনি পদক্ষেপ।