‘তত্ত্বাবধায়ক পুনর্বহাল ও সীমানা পুনর্নির্ধারণে সব দল একমত’

সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক প্রকাশিত: জুলাই ২, ২০২৫, ০৯:৪৭ পিএম
সাংবাদিকদের কথা বলছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ। ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেছেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল এবং নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে।”

বুধবার (২ জুলাই) ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের অষ্টম দিনের আলোচনার মাঝে তিনি এসব কথা বলেন।

আলোচনার বিষয় তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন, “আজকে আলোচ্য সূচিতে ৩টি বিষয় ছিল, নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের বিষয়। এরমধ্যে আমরা প্রথম দুটি বিষয় আলোচনা করতে পেরেছি। নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে বড় ধরনের সাফল্য অর্জিত হয়েছে। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।”

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, “নির্বাচন কমিশন থেকে নির্বাচন প্রক্রিয়া ও নির্বাচনী আসন নির্ধারণ নিয়ে কাজ চলমান দেখতে পাচ্ছি। নির্বাচন সংস্কার কমিশন থেকে সুস্পষ্ট সুপারিশ ছিল। সেখানে বলা হয়েছে, আশু ব্যবস্থা হিসেবে কী করা যেতে পারে।”

আলী রীয়াজ বলেন, “দ্বিতীয় বিষয় দীর্ঘমেয়াদে সাংবিধানিকভাবে কিছু করা। দীর্ঘমেয়াদি ও স্থায়ী সমাধানে যে ঐকমত্য হয়েছে তা হলো, প্রতি আদমশুমারি অনধিক ১০ বছর পরে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের জন্য সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদের দফা ১-এর(ঘ) শেষে আইনের দ্বারা একটি বিধান যুক্ত করা। এর অর্থ হচ্ছে সংসদীয় আসন নির্ধারণ করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা। এই কমিটির ক্ষেত্রে আরও বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সীমানা নির্ধারণের আইন ২০২১ যেটা ২০২৫ সালে সংশোধিত হয়েছে। আমরা সংবিধানে কিছু বিষয় যুক্ত করার কথা বলেছি। তার পাশাপাশি সেটি বাস্তবায়ন করতে আইনের মধ্য দিয়ে কমিটির পরিধি ও কার্যপরিধি গঠন নিয়ে সুনির্দিষ্ট আইন থাকার কথা বলেছি। দীর্ঘমেয়াদি স্থায়ী সমাধানের জন্য এ ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে।”

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, “ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের সহায়তায় যথাযথ দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে বিশেষায়িত কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। কমিটি গঠন হয়ে থাকলে পরিবর্তন সাধন করে সেই কমিটি দ্বারা সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করা। বর্তমান যে কমিটি সেটি যেন পরিবর্তন করে রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের প্রতিফলন ঘটে। আমরা এ বিষয়টি সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করব।”

আলী রীয়াজ বলেন, “বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের জন্য অভিন্ন মত পোষণ করেছে। সুনির্দিষ্ট ঐকমত্য আছে। এর গঠন এবং কাঠামোগত বিষয় ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার কতদিন থাকবে তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আলোচনায় বিভিন্ন রকম মতামত এসেছে। এ বিষয়ে দুটি সুপারিশ ছিল—সংবিধান সংস্কার কমিশন থেকে ৯০ দিনের আর নির্বাচন কমিশন থেকে সুপারিশ ছিল ১২০ দিনের। সময় ও পরিধি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”

[117219]

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আরও বলেন, “কোনো প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ হবে তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এই আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলো অনেক কাছাকাছি এসেছে। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে তা অত্যন্ত ইতিবাচক। আশা করি, এসব বিষয়ে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারব।”