কোরবানি দিতে গিয়ে আহত দুই শতাধিক

সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২৫, ০৯:৫৩ পিএম

পবিত্র ঈদুল আজহার প্রথম দিনে রাজধানীসহ আশপাশের এলাকায় কোরবানির পশু জবাই ও মাংস কাটাকাটি করতে গিয়ে অসাবধানতাবশত আহত হয়েছেন দুই শতাধিক মানুষ। এদের মধ্যে কেউ গরুর লাথি খেয়ে পা ভেঙে ফেলছেন, কারও আঙুল পড়ে গেছে। কেউ আবার সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।

শনিবার (৭ জুন) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) জরুরি বিভাগে মানুষের এমন করুণ চিত্র চোখে পড়ে।

রাজধানীর শেখেরটেক থেকে চিকিৎসা নিতে এসেছেন মো. আজমল হক (৫৫)। তিনি নিজের গরু কাটতে গিয়ে হাতের কবজি কেটে ফেলছেন। হাড় বের হয়ে গেছে।

আগারগাঁওয়ের মাওলানা ওমর ফারুক। সায়েদাবাদে গরু জবাই করতে গিয়ে হাতের তিনটি আঙুলের অনেকাংশ কেটে ফেলেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেছেন দ্রুত। সেখানে এক্সরে করেছেন। তারা রেফার করছে নিটোরে। অপারেশন লাগবে তার।

দুলাল হোসেন এসেছেন সিরাজগঞ্জ থেকে। মাটিতে গরু ফেলতে গিয়ে পায়ের ওপর পড়ে ডান পা ভেঙে গেছে। একদিন পর তার অপারেশন করা লাগবে।

সাভার থেকে এসেছেন লিটন মিয়া। গরুর লাথিতে হাঁটুতে ব্যথা পেয়েছেন। স্বাভাবিক হাঁটতে পারেন না। তাকে প্লাস্টার করে দেওয়া হয়েছে। ১৪ দিন পর ফলোআপ করতে বলেছেন চিকিৎসক।

খিলগাঁও থেকে এসেছেন রতন মিয়া। গরুর গোস্ত কাটতে গিয়ে বাম হাতের কনিষ্ঠ আঙুলের পেটে লেগেছে। পুরো ফেড়ে গেছে। তাকেও সেলাই দিয়ে ওষুধ লিখে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ইসমাইল হোসেন (৫৫) খিলক্ষেত থেকে এসেছেন। গরুর গোস্ত কাটতে গিয়ে অন্যের হাতের চাপাতি ছুটে এসে তার পা ভেঙে গেছে।

আজমল-রতন মিয়াদের মতো সারা দিনে (বিকেল ৫টা পর্যন্ত) ২০১ জন নানা দুর্ঘটনায় আহত হয়ে দৌড়ে এসেছেন নিটোরে। দায়িত্বরত চিকিৎসক, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও নার্সরা মিলে তাদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। তারপরও সাধ্যমতো সবাইকে চিকিৎসা দিচ্ছেন।

ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, “২০১ জন এখন পর্যন্ত দেখেছি। এখন আরও বেশি আসছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগীর চাপও বাড়ছে। বেশিরভাগ গরু কাটতে গিয়ে হাত-পায়ে ইনজুরি হয়েছে। হাত-পা ভেঙে গেছে এমন।”

তিনি বলেন, “জরুরি বিভাগে আমরা তিনজন চিকিৎসক চিকিৎসাসেবা দিচ্ছি ননস্টপ।”