ইরানের পর কি রাশিয়া, অভিমত রুশ বিশ্লেষকদের

সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০২৫, ১০:৩৩ এএম
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন

যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে। এই পদক্ষেপ শুধু মধ্যপ্রাচ্যের শক্তির ভারসাম্যকেই নাড়িয়ে দেয়নি, বরং এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্ব রাজনীতিতেও। মস্কো থেকে এর প্রতিক্রিয়া এসেছে দ্রুত ও তীব্রভাবে। রুশ রাজনীতিক ও বিশ্লেষকেরা এই হামলাকে একটি গুরুতর মোড় হিসেবেই দেখছেন। কেউ এটিকে ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরু’ বলছেন, আবার কেউ বলছেন, ‘ইরানের পতন হলে, রাশিয়া তার পরই’।

উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে রাশিয়া ইন গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের সম্পাদক ফিয়োদর লুকিয়ানভের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ইরান সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রকে লক্ষ্য না করেই ইসরায়েলের ওপর হামলা বাড়াতে পারে। কারণ, আমেরিকার সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষে গেলে তা একটি দীর্ঘ যুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে। এই সুযোগে ইসরায়েল ট্রাম্পকে আরও চাপ দিতে পারে, যেন ইরানে শাসন পরিবর্তন নিশ্চিত হয়।

রুশ রাজনীতি বিশ্লেষক তিগরান মেলোইয়ান বলছেন, ইরান কিছু না করলে তা দুর্বলতার বার্তা দেবে। তাই তারা হয়তো প্রতিশোধ নেবে। তবে তা হবে মেপে। আরেকটি সম্ভাবনা হলো, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার প্রতিরোধ চুক্তি (এনপিটি) থেকে সরে যেতে পারে। তবে তাতে চীন-রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার ঝুঁকি আছে।

রাশিয়ার ফেডারেশন কাউন্সিলের ভাইস স্পিকার কনস্টান্টিন কোসাচেভ স্পষ্ট করে বলেছেন, ইরাক, লিবিয়া ও ইরানের মতো দেশগুলো পারমাণবিক শক্তি না থাকায় সহজে হামলার শিকার হয়েছে। কিন্তু ভারত, পাকিস্তান, উত্তর কোরিয়া ও ইসরায়েলের মতো অস্ত্রধারী দেশগুলোকে কেউ ছুঁয়ে দেখে না। এ থেকেই স্পষ্ট, আত্মরক্ষার জন্য পারমাণবিক শক্তি অর্জনই নিরাপত্তার একমাত্র ভরসা হয়ে উঠছে।

এদিকে প্রভাবশালী রুশ দার্শনিক আলেকজান্ডার দুগিন মত দিয়েছেন, ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ’ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র যখন ইরানকে আক্রমণ করতে পারে, তখন রাশিয়াকেও রেহাই দেবে না। এই আশঙ্কা থেকে তিনি বলেন, ‘আমরা (রাশিয়া) যুদ্ধের মধ্যেই আছি। প্রশ্ন হচ্ছে, লড়ব কীভাবে।’