কর ও ব্যয়-সংক্রান্ত বাজেট বিল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা মতবিরোধ অবশেষে প্রকাশ্য বিবাদে রূপ নিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও টেসলা প্রধান ইলন মাস্কের মধ্যে। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) পাল্টাপাল্টি আক্রমণাত্মক মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি ঘটেছে। খবর এফপির।
ট্রাম্প প্রকাশ্যে মাস্কের সমালোচনা করে বলেন, তিনি টেসলার সিইওর ওপর ‘ভীষণ হতাশ’। ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প আরও জানান, মাস্কের সঙ্গে তার একসময় ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল, তবে সেটি আর টিকে থাকবে কি না, সে বিষয়ে তিনি সন্দিহান।
ট্রাম্পের এই মন্তব্য সরাসরি টেলিভিশনে সম্প্রচার হওয়ার মুহূর্তে মাস্ক এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লাইভ টুইট করে প্রতিক্রিয়া জানান। সেখানে তিনি দাবি করেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে তার সহায়তা ছাড়া ট্রাম্প জয়ী হতে পারতেন না। ট্রাম্পকে ‘অকৃতজ্ঞ’ বলেও তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি।
এ ঘটনার পরপরই টেসলার শেয়ারদরে বড় ধরনের পতন দেখা যায়, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করে।
এর আগে, ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’ নামে পরিচিত ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন কর ও ব্যয়-সংক্রান্ত বাজেট বিলকে ‘জঘন্য’ বলে মন্তব্য করেন মাস্ক। তার মতে, বিলটি বাজেট ঘাটতি আরও বাড়িয়েছে এবং সরকারি ব্যয় কমানোর প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
গত ২২ মে মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদে পাস হওয়া এ বিলকে কেন্দ্র করেই ট্রাম্প-মাস্ক সম্পর্কের টানাপোড়েন তীব্র হয়। মাস্কের মতে, বিলটি ‘নৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে দায়িত্বজ্ঞানহীন’।
গতকাল ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র সফররত জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎসের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকের মাঝেই মাস্ক প্রসঙ্গে প্রশ্ন উঠলে ট্রাম্প বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, 'আমি হতাশ, কারণ এখানে উপস্থিত অন্য যেকোনো ব্যক্তির চেয়ে মাস্ক বিলটির খুঁটিনাটি ভালো করেই জানতেন। কিন্তু হঠাৎ করেই তিনি বিরোধিতা শুরু করলেন।'
তবে ট্রাম্পের এসব অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন ও অসত্য’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন মাস্ক।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি দক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) প্রধানের পদ থেকে ইলন মাস্ক সম্প্রতি সরে দাঁড়ান। তার বিদায় উপলক্ষে ওভাল অফিসে ট্রাম্প এক জমকালো সংবর্ধনার আয়োজন করেছিলেন। সেই সৌজন্যের এক সপ্তাহও না যেতেই এই দ্বন্দ্ব সামনে আসে, যা ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে।