বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতেই থাকতে হবে? সোনাক্ষীর বক্তব্যে যা বললেন মনোবিদ

সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২০, ২০২৫, ১১:৪৭ এএম

বিয়ের পর যৌথ পরিবারে থাকা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে বলিউড অভিনেত্রী সোনাক্ষী সিনহার বক্তব্য ঘিরে। অনেকের কাছেই বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে থাকা যেন অলিখিত নিয়ম। তবে এই সিদ্ধান্ত কি সবার জন্য একরকম হওয়া উচিত? মনোবিদ আত্রেয়ী ভট্টাচার্যের মতে— একেবারেই নয়।

সম্প্রতি এক আলোচনায় উঠে আসে বলিউড সিনেমা তু ঝুটি ম্যায় মক্কার-এর প্রসঙ্গ। যেখানে মেয়েটির স্পষ্ট ‘না’ থাকা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত তাকে রাজি করিয়ে যৌথ পরিবারে থাকতে বাধ্য করা হয়। সিনেমায় বিষয়টি সুখী পরিণতি হিসেবে দেখানো হলেও বাস্তবে এটিকে মনোবিদরা ‘ম্যানিপুলেশন’ বা মানসিক চাপ প্রয়োগ হিসেবেই দেখেন।

এর বিপরীতে বাস্তব জীবনে সোনাক্ষী সিনহার সিদ্ধান্ত ভিন্ন। বিয়ের আগে স্বামী জাহির ইকবাল তাকে আলাদা থাকার বিষয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। তখন সোনাক্ষী নিজেই জানিয়েছিলেন— জাহির চাইলে আলাদা থাকতে পারেন, তবে তিনি তার পরিবারের সঙ্গেই থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। অর্থাৎ সিদ্ধান্তটি ছিল সম্পূর্ণ তার নিজের এবং আলোচনার মাধ্যমেই নেওয়া।

মনোবিদ আত্রেয়ী ভট্টাচার্য বলেন, বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে থাকবেন কিনা— এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার শুধুমাত্র নবদম্পতির। অন্য কারও সেখানে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। কিন্তু আমাদের সমাজে যৌথ পরিবারে থাকার প্রবণতা এতটাই গভীর যে, কেউ আলাদা থাকতে চাইলে সমালোচনা ও ভুল বোঝাবুঝির শিকার হতে হয়।

তিনি আরও বলেন, এই জটিলতা এড়াতে বিয়ের আগেই স্পষ্ট কথোপকথন জরুরি। কেন কেউ শ্বশুরবাড়িতে থাকতে চাইছেন না বা কেন থাকতে চাইছেন— তার যুক্তি পরিষ্কারভাবে জানানো দরকার। আলোচনা হলে সমাধান সহজ হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে প্রশ্ন উঠছে— কেন সবসময় মেয়েদেরই নিজের বাড়ি ছেড়ে শ্বশুরবাড়িতে যেতে হবে? কেন আলাদা সংসার গড়ার স্বাধীনতা থাকবে না? এ বিষয়ে মনোবিদের মতে, সময় বদলেছে বলেই এসব প্রশ্ন উঠছে, যা স্বাভাবিক। তবে সিদ্ধান্ত যেটাই হোক, সেটির প্রতি আত্মবিশ্বাস ও স্বচ্ছতা থাকা জরুরি।

আত্রেয়ী ভট্টাচার্য বলেন, অনেকেই আলাদা থাকতে চান নিজের মতো করে সংসার গুছাতে, দৈনন্দিন বিষয়ে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নিতে কিংবা সঙ্গীর সঙ্গে নিরিবিলি সময় কাটাতে। আবার অনেক ক্ষেত্রে বাবা-মায়েরাই নবদম্পতিকে আলাদা থাকার পরামর্শ দেন, যাতে সম্পর্ক আরও সুস্থ থাকে।

সবশেষে মনোবিদের মত— বিয়ের পর কোথায় ও কাদের সঙ্গে থাকবেন, সেটি কোনো সামাজিক চাপে নয়; বরং পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সম্মতির ভিত্তিতেই হওয়া উচিত। ঠিক যেমনটি সোনাক্ষী সিনহা ও জাহির ইকবালের ক্ষেত্রে দেখা গেছে।