‘তানহার কবরের পাশে আমাকে কবর দেওয়া হোক’

নরসিংদী প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ২৬, ২০২৪, ০১:০২ পিএম
জেলার মানচিত্র

নরসিংদীর শিবপুরে প্রেমিকার আত্মহত্যার শোক সইতে না পেরে ১৯ দিন পর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন সিফাত (১৯) নামের এক তরুণ।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে উপজেলার মাছিমপুর ইউনিয়নের খড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সিফাত ওই গ্রামের ইব্রাহিমের ছেলে। সিফাত শিবপুর সরকারি শহীদ আসাদ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।

মৃত্যুর আগে ফেসবুকে সর্বশেষ স্ট্যাটাসে সিফাত লিখেন, “তানহায় আত্মহত্যা করে প্রমাণ করে গেলো আমারে কতটা ভালোবাসে। আমিও প্রমাণ করে দিমু তানহারে আমি কতটা ভালোবাসি। কারো সাথে ভুল করে থাকলে মাফ করে দিও। আর দেখা হবে না সবাই দোয়া কইরো শান্তিতে থাকি কিংবা অশান্তিতে দুজন যেনো এক সাথে থাকতে পারি। শেষ ইচ্ছা: তানহার কবরের পাশে আমাকে কবর দেওয়া হোক। আমি পরিস্থিতির শিকার। আর আমার কোনো কিছুর জন্য তানহার পরিবার বা আমার পরিবার দায়ী না। এমনকি আমার কোনো ভাই ব্রাদার বা বন্ধুও দায়ী না। যা হবে আমার নিজের ইচ্ছেতে হবে। সত্যি বলতে আমার আর বাঁচার ইচ্ছে নাই। আমাকে যদি কেউ বাঁচিয়েও নেয়, আমি পুনরায় আত্মহত্যার চেষ্টা করমু। প্লিজ আমাকে কেউ বাঁচানোর চেষ্টা কইরো না। বেঁচে থেকে আর কী হবে? যার জন্য বাঁচার কথা ছিলো সে তো আর নাই।”

নিহতের বাবা ইব্রাহিম বলেন, “প্রতিবেশী খলিলের মেয়ে তানহার (১৫) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল আমার ছেলে সিফাতের। ৩ এপ্রিল রাত দুইটার সময় তানহা ঘরের ভিতর থেকে আর সিফাত জানালার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার সময় দেখে ফেলে আঙ্গুর। এ সময় আঙ্গুর তানহাকে কুপ্রস্তাব দেয়। সিফাত এতে নিষেধ করে। কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আঙ্গুর সিফাতকে মারধর করে টাকা দাবি করে। পরে সে উত্তেজিত হয়ে আঙ্গুরকে কুপিয়ে আহত করে। মারামারি বিষয়টি মামলা চলছে। লোকলজ্জায় এপ্রিল মাসের ৬ তারিখ রাতে তানহা নিজ ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এইসব বিষয়ে শালিস দরবার হওয়ার কথা ছিল। শালিস দরবারে আমাকে ও আমার ছেলেকে এটা করবে ওটা করবে বলে বিভিন্নভাবে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতো। দরবারে গেলে জমির দলিল নিয়ে যেতে বলতো। এসব মানসিক চাপ সইতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে ছেলে সিফাত। আমি এর বিচার দাবি করছি।”

বিষয়টি নিশ্চিত করে শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও তদন্তের পর আত্মহত্যার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।