৫ মাসের শিশু দুধের জন্য কাঁদছিল, মা চিরতরে সে কান্না থামিয়ে দিলেন

রংপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৫, ০১:৩৭ পিএম
ছবি : সংগৃহীত

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় এক মায়ের হাতে খুন হয়েছে পাঁচ মাসের কন্যাশিশু। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ভোরে উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের পলাশবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিশু ওই গ্রামের বাবুলাল ও তুলসী রানী দম্পতির দ্বিতীয় কন্যা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শিশুটি কান্নাকাটি করায় দাদি পাতানী রানী সকালে মা তুলসী রানীর হাতে তুলে দেন দুধ খাওয়ানোর জন্য। কিছুক্ষণ পর শিশুটিকে ঘরে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন তুলসি রানী। পরে রক্তাক্ত দেহ স্বামী বাবু লালের হাতে তুলে দেন তিনি। এ সময় পাতানি রানী চিৎকার করলে গ্রামের লোকজন ছুটে এসে ঘাতক মাকে আটক করে রাখেন।

শিশুটির বাবা হোটেল শ্রমিক বাবু লাল বলেন, কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। মাসখানেক ধরে স্ত্রীর অসুস্থ, বাচ্চাটা আমার মায়ের কাছে থাকত ৷ সোমবার ভোরে দুধ খাওয়ার জন্য কান্না করছিল। এ জন্য ওর মার কাছে দেয়। মেয়েটার কান্না থামল, কিন্তু এভাবে থামবে ভাবিনি কোনো দিন।

শাশুড়ি পাতানী রানী বলেন, পাঁচ-ছয় দিন ধরে নাতনি আমার কাছেই ছিল। সকালে কান্না করছিল, তাই বউকে দিই দুধ খাওয়াতে। কিছুক্ষণ পর দেখি ছেলে হাতে করে গলাকাটা বাচ্চা নিয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছে। বউ শুধু চুপ করে আছে।

এদিকে ঘটনার পর আটক তুলসি রানী গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেন। শারীরিক অসুস্থতা ও মানসিকতা ভারসাম্যহীন অবস্থার কারণে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছেন প্রতিবেশীদের অনেকে। 

তুলসী রানীর ভাই মানিক মিয়া অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বলেন, আমার বোন সন্তানদের খুব ভালোবাসে। কিন্তু অসুস্থ থাকলে মানুষ স্বাভাবিক থাকে না। সুস্থ থাকলে এ কাজ কোনো দিন করত না।

কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সবিত্রী সেন বলেন, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। শুনেছি নিহত শিশুর মা মানসিক রোগে ভুগছেন। 

তারাগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, ওই নারীকে আটক করা হয়েছে। তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। স্বজনেরা জানিয়েছেন, তিনি মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। মামলা প্রক্রিয়াধীন।