ট্রেন পছন্দ না হওয়ায় রেললাইনে বসে পড়লেন ‘জুলাই যোদ্ধারা’ 

রাজশাহী প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ৫, ২০২৫, ১১:৩৯ এএম
ছবি : সংগৃহীত

রাজশাহীতে জুলাই যোদ্ধাদের জন্য ভাড়া করা বিশেষ ট্রেন পছন্দ না হয় তাদের একাংশ রেললাইনে বসে পড়েন। কেউ আবার শুয়ে পড়েন। তারা বনলতা ও সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনের মতো আন্তনগর ট্রেনে করে ঢাকা যেতে চাইছিলেন। বিশেষ ট্রেনটিতে ছিল লোকাল ট্রেনের বগি। এ নিয়ে যারা ট্রেনে উঠে পড়েছিলেন, তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। শেষ পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা অন্যদের তোপের মুখে টিকতে না পেরে রেললাইন ছেড়ে দেন। পরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ৩৫ জন আন্দোলনকারীকে আলাদাভাবে সিল্কসিটি ট্রেনে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর জাতীয় সংসদের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ছাত্র-জনতার জন্য ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৯১ টাকা ভাড়া দিয়ে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়। এই ট্রেনে ৫৪৮টি আসন আছে। বিভিন্ন স্টেশন থেকে যাত্রীদের ওঠার কথা। রাজশাহী থেকে প্রায় ২৫০ জন যাত্রী ওই ট্রেনে ঢাকায় গেছেন। ট্রেনটি সকাল ৭টা ২০ মিনিটে রাজশাহী স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্টেশনে গিয়ে লোকাল ট্রেনের বগি দেখে নিজেদের জুলাই যোদ্ধা পরিচয় দেওয়া একদল ব্যক্তি ক্ষুব্ধ হন। তারা আন্তনগর বনলতা ও সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনের মতো ট্রেনের দাবি করেন। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করে, যে রকম ট্রেন দেওয়া হয়েছে, সে রকম ভাড়াই সরকারের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে। আন্তনগর এক্সপ্রেস ট্রেন নিতে হলে আরও বেশি ভাড়া দিতে হতো। কিন্তু আন্দোলনকারীরা ওই ট্রেনে উঠতে নারাজ। তাঁরা ট্রেনের সামনে বসে পড়েন। অনেকেই শুয়ে পড়েন।

জানতে চাইলে স্টেশনমাস্টার শহীদুল আলম বলেন, সরকার যেমন ভাড়া দিয়েছে, কর্তৃপক্ষ সে রকম ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে। এখন তাঁদের কয়েকজন এসে আন্তনগর বনলতা ও সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনের মতো ট্রেন দাবি করে বসলেন। এ নিয়ে ট্রেন ছাড়তে খানিকটা দেরি হয়েছে। পরে যাঁরা বিশেষ ট্রেনে যাননি, তাঁদের ৩৫ জনকে আন্তনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনে বিশেষ ব্যবস্থায় পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘সরকার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই ট্রেনগুলো নিয়েছে। তাদেরই একটি ট্রেন এটি। এটি স্থানীয়ভাবে ভাড়া করা নয়।’

ঐতিহাসিক জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ অনুষ্ঠানে সারা দেশ থেকে ছাত্র-জনতা আনতে আট জোড়া ট্রেন ভাড়া করেছে সরকার। এসব ট্রেনে করে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ছাত্র-জনতাকে আজ দুপুরের মধ্যে ঢাকায় নিয়ে আসা হবে। আবার কর্মসূচি শেষে এসব ট্রেনে করে তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হবে। ৮ জোড়া ট্রেনের জন্য প্রায় ৩০ লাখ ৪৬ হাজার টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ বিকেলে রাজধানীর জাতীয় সংসদের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করা হবে।