একসঙ্গে না ফেরার দেশে ৩ বন্ধু

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২৫, ০৯:২০ এএম
ছবি : সংগৃহীত

একসঙ্গেই চলাফেরা করতেন। বিদেশেও একসঙ্গে থাকতেন, দেশে এসেও একসঙ্গে ঘোরাঘুরি করতেন। রোববার একসঙ্গে না ফেরার দেশে চলে গেলেন তারা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সড়কে ঘটে গেছে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। সৌদি আরব ফেরত তিন প্রবাসী বন্ধু বেড়াতে গিয়ে প্রাণ গেল সড়কে। পরিবারের সঙ্গে কাটানো দিনগুলোর স্মৃতি নিয়েই চিরতরে বিদায় নিলেন— লোকমান হোসেন (৩০), তুহিন হাসান (২৮) ও সুমন হোসেন (২৯)।

তিনজনই সৌদিপ্রবাসী। তারা মাত্র কয়েক মাস আগে এসেছেন ছুটিতে। এর মধ্যে লোকমান মাত্র ১৭ দিন আগে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেছিলেন বিয়ের মাধ্যমে। 

নিহত তুহিন সরাইল উপজেলার মৈন্দ গ্রামের শাহজাহান মিয়ার ছেলে, লোকমান একই গ্রামের মকবুল আলীর ছেলে, সুমন সরাইল উপজেলার বাড়িউড়া গ্রামের আল-আমিন মিয়ার ছেলে। 

রোববার (২৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টায় বিজয়নগর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রামপুর এলাকায় দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে ৩ জনই সৌদিপ্রবাসী। 

জানা যায়, রোববার একটি মোটরসাইকেলে করে তিন বন্ধু সুমন, লোকমান ও তুহিন বেড়াতে যাচ্ছিলেন চান্দুরা এলাকায়। অন্যদিকে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন বিজয়নগরের আকরাম হোসেন ও রংপুরের মনিরুজ্জামান। হঠাৎ দুই মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এমন সময় পেছন থেকে দ্রুতগতির সিএনজিচালিত অটোরিকশা দুই মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিন বন্ধুসহ চারজন এবং হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে মারা যায় আরেকজন। তিন বন্ধু একসঙ্গে কাজ করতেন সৌদি আরবে। ছুটি কাটিয়ে ১০-১৫ দিনের মধ্যেই ফেরার কথা ছিল তাদের। লোকমান মাত্র ১৭ দিন আগে বিয়ে করেছেন। তার স্ত্রী, পরিবার আজ দিশেহারা।

সরাইলের বাড়িউড়া গ্রামের স্থানীয়রা বলেন, ওরা সব সময় একসঙ্গেই চলাফেরা করত। বিদেশেও একসঙ্গে থাকত, দেশে এসেও একসঙ্গে ঘোরাঘুরি করত। রোববার একসঙ্গে না ফেরার দেশে চলে গেল। এটা মেনে নিতে পারছে না কেউ। পরিবার এই শোক কাটাবে কি করে?  

দুর্ঘটনার দিন খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চারজনের মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়। আহত কয়েকজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর মধ্যে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেওয়ার সময় একজন নিহত হন।