ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলায় গ্রামের বাড়িতে চিরনিদ্রায় শায়িত হলো রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ১১ বছরের রাইসা মনি। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে বাজড়া কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এর আগে ভোরে রাইসা মনির লাশ নিয়ে বাড়িতে পৌঁছান তার স্বজনেরা। এ সময় সেখানে হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। রাইসা মনির মা-বাবার পাশাপাশি কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীরা।
নিহত রাইসা মনি বাজরা গ্রামের শাহাবুল-মিম দম্পতির কন্যা। রাইসার জন্মের দুই বছর আগে এই দম্পতির কোলজুড়ে আসে তার বড় বোন সিনথিয়া (১৩)। তাদের সবার ছোট ছেলে রাফসান শেখ (৪)।
রাইসা মনির বাবা শাহাবুল শেখ বলেন, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের পরদিন গত মঙ্গলবার ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ডিএনএ ল্যাবের সদস্যরা। নমুনাগুলো বিশ্লেষণ করে আমার মেয়ে রাইসা মনির মরদেহ শনাক্ত করার পর আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাতেই মেয়ের মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার উদ্দেশে রওনা হই। বাড়িতে পৌঁছাতে ভোর হয়ে যায়। আজ (শুক্রবার) সকাল ৯টায় স্থানীয় ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে বাজড়া কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রাইসা মনির মা-বাবার ইচ্ছা ছিল ছেলেমেয়েকে ভালো স্কুলে পড়ানোর। উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবেন। সেই লক্ষ্যে ভর্তি করেছিলেন উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। রাইসা মনি তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত। একই স্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে রাইসার বড় বোন সিনথিয়া।
গত সোমবার দুপুরে বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের হায়দার আলী ভবনে বিধ্বস্ত হয়। ওই ঘটনায় শুক্রবার পর্যন্ত রাইসা মনিসহ ৩২ জন প্রাণ হারায়। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ দুর্ঘটনায় মোট ৫১ জন আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছে।