কুমিল্লার মুরাদনগরে মব সন্ত্রাস তৈরি করে মা, ছেলে ও মেয়েকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৮ আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (৯ জুলাই) কুমিল্লার ১১নং আমলী আদালতের বিচারক মমিনুল হক তাদের তিনদিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।
আদালতের পরিদর্শক মো. সাদেকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিলেন, শুনানি শেষে বিচারক তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
আসামিরা হলেন- মো. সবির আহমেদ (৪৮), মো. নাজিম উদ্দীন বাবুল (৫৬), ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়া (৫০), রবিউল আওয়াল (৫৫), দুলাল (৪৫), আতিকুর রহমান (৪২), বয়েজ মাস্টার (৪৩) ও আকাশ (২৪)।
এর আগে গত ৩ জুলাই মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন কড়ইবাড়ি গ্রামে মোবাইল চুরির ঘটনা ও মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে স্থানীয়দের একটি দল প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে মা-মেয়েসহ একই পরিবারের তিন সদস্যকে নির্মমভাবে গণপিটুনি ও কুপিয়ে হত্যা করে। নিহতরা হলেন— কড়ইবাড়ি গ্রামের জুয়েল মিয়ার স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুবি (৫৫), তার ছেলে রাসেল মিয়া (২৮) এবং মেয়ে জোনাকি আক্তার (২২)। এই ঘটনায় গুরুতর আহত হন রুবির আরেক মেয়ে রুমা আক্তার। তাকে প্রথমে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত রুবির মেয়ে রিক্তা বেগম বাদী হয়ে বাঙ্গরা বাজার থানায় মামলা করেন। মামলায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল ও ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়াসহ ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ২৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলার পরপরই সেনাবাহিনী এবং র্যাব অভিযান চালিয়ে আট জনকে গ্রেপ্তার করে।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলাটি প্রথমে বাঙ্গরা থানার পুলিশ এবং সোমবার বিকেলে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলার তদন্ত করছেন জেলা ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) নয়ন কুমার চক্রবর্তী।
এদিকে মুরাদনগরে অপর ঘটনায় এক নারীর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার মূলহোতা শাহপরানকে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন একই আদালত। গত ২৬ জুন রাতে ওই নারী ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে শাহ পরানসহ অন্যরা ওই নারীকে মারধর করে তার ভিডিও ভাইরাল করে দেন। পরে ওই নারীর করা পর্নোগ্রাফির মামলায় গ্রেপ্তার হন মূলহোতা শাহপরানসহ ৫ জন। এর আগে ৪ জনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রুহুল আমিন জানান, শাহপরান ওই নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ফজর আলীর ছোট ভাই। তারই পরিকল্পনায় ওই নারীর ভিডিও ধারণ ও ভাইরাল করা হয়। তার ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলে বিচারক ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।