মোংলায় নদীতে ভেসে বেড়াচ্ছে কুমির, আতঙ্কে তীরবর্তী মানুষ

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০২৫, ০৫:৩২ পিএম

সম্প্রতি বাগেরহাটের মোংলায় নদীতে কুমির দেখা গেছে। ট্রলারে নদী পারাপারের সময় একাধিকবার যাত্রীরা কুমির ভেসে বেড়াতে দেখেছেন। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে নদীপারের সাধারণ মানুষের মধ্যে।

স্থানীয়রা জানান, পশুর নদী থেকে শুরু করে সুতারখালী, ঢাকী ও শিবসা নদী পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে মাঝেমধ্যে কুমির দেখা যাচ্ছে। গত সপ্তাহে পূর্ব ঢাংমারী এলাকায় মাছ ধরতে গিয়ে সুচিত্রা সরদার (৫৫) কুমিরের আক্রমণের শিকার হন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) ভোরে মোংলার জয়মনির জেলে আবেদ খান নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে যাত্রীবাহী ট্রলারের পাশেই কুমির দেখতে পান।  তিনি বলেন, “এমন ঘটনা এর আগে কখনো দেখিনি। ভয়ে জাল না ফেলে আমরা ফিরে আসি।”

স্থানীয়দের দাবি, কেবল মানুষ নয়—পূর্বে গবাদিপশুও কুমিরের আক্রমণের শিকার হয়েছে। ২০২৪ সালে সুন্দরবন সংলগ্ন ফকির কোনা এলাকায় খায়রুল ইসলাম মোড়ল নামে এক ব্যক্তি কুমিরের আক্রমণে প্রাণ হারান। একই বছর রাজু হাওলাদার নামের একজন যুবক নদীতে গোসল করতে গিয়ে কুমিরের কামড়ে আহত হন।

এ বিষয়ে করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবীর বলেন, “সুন্দরবনের কুমিরের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। যার কারণে খাবারের খোঁজে কিংবা আবাস সংকটে কুমিরগুলো পার্শ্ববর্তী নদীগুলোতে চলে আসছে।”

তিনি আরও বলেন, “মানুষের অনেকের মধ্যেই ভুল ধারণা থাকে যে এসব নদীতে কুমির নেই। বাস্তবে সুন্দরবনের আশপাশের সব নদীই ঝুঁকিপূর্ণ। করমজল কেন্দ্র থেকে এখন পর্যন্ত ২০৯টি কুমির অবমুক্ত করা হয়েছে। সচেতনতা ছাড়া দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব নয়।”

এদিকে নদীর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের সচেতন করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পরিবেশকর্মীরা কুমির চলাচল চিহ্নিত করে সতর্কতা বার্তা প্রচার, সাইনবোর্ড বসানো ও নিয়মিত মাইকিং করে যাচ্ছেন।