কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে বন্ধুকে মাদক মামলায় ফাঁসাতে গিয়ে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন দুই যুবক।
সোমবার (১৬ জুন) নাগেশ্বরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তার দুই বন্ধু হলেন- ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ অনন্তপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে জুয়েল হক। অন্যজন নাগেশ্বরী উপজেলার এগারো মাথা সাতকুড়ারপাড় এলাকার আছকের আলীর ছেলে মনির হোসেন। এদের মধ্যে জুয়েল হক মূল পরিকল্পনাকারী।
নাগেশ্বরী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অপূর্ব কুমার বলেন, শনিবার (১৪ জুন) রাতে মনির হোসেন নামে এক ব্যক্তি থানায় ফোন করে জানায় নেওয়াশী ইউনিয়নের এগারো মাথা বাজারে এক ব্যক্তির মোটরসাইকেলের সিটের নিচে ইয়াবা রয়েছে। পরে অভিযান চালিয়ে বাজার থেকে মোটরসাইকেলটি আটক করে সিট ও যন্ত্রাংশ খুলে ৬৭টি ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া যায়। মোটরসাইকেলের মালিক মিলন মিয়াকে জিজ্ঞসাবাদ করা হয়। মিলন ফুলবাড়ী উপজেলার কাশীপুর ইউনিয়নের ঠাটারীটারি গ্রামের মোজাফ্ফর হোসেনের ছেলে।
এসআই বলেন, ঘটনাটি নিয়ে পুলিশের সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসাবাদে গাড়ির মালিক মিলন ইয়াবার বিষয়ে কিছুই জানে না বলেও জানান। ধারণা করা হয়, ওই ব্যক্তিকে ফাঁসাতে সিটের নিচে ইয়াবা রাখা হতে পারে। পরে বাজার থেকে সোর্স মনিরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায়, জুয়েলের কথায় পুলিশকে জানান তিনি। পরে রোববার ভোরে বাড়ি থেকে জুয়েলকে আটক করে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে ফাঁসানোর পরিকল্পনার কথা স্বীকার করে জুয়েল।
জুয়েলের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, প্রেমসহ অন্য ব্যক্তিগত বিষয় জুয়েলের পরিবারকে জানায় তার বন্ধু মিলন। এ নিয়ে চার মাস আগে তাদের মনোমালিন্য হলে আর এক বন্ধু মনিরসহ মিলনকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করে জুয়েল। এরপর মাদক দিয়ে ফাঁসাতে ১০ হাজার টাকার ইয়াবা ট্যাবলেট ক্রয় করে। ঘটনার দু’দিন আগে মিলনের মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি যায় জুয়েল। বাড়িতে সিটের নিচে ইয়াবা ট্যাবলেট রেখে গাড়ি ফেরত দেয়। পরে পুলিশকে সোর্স হিসেবে জানায় মনির।
নাগেশ্বরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, “সোর্সের মাধ্যমে খবর পেয়ে মোটরসাইকেলসহ ইয়াবা উদ্ধারের পর ঘটনাটি নিয়ে আমাদের সন্দেহ হয়। কৌশলে সোর্সদের জিজ্ঞাবাদ করে দেখা যায় ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে বিরোধের জেরে পরিকল্পনা করে মোটরসাইকেলে ইয়াবা রাখা হয়েছে। পরে পরিকল্পনাকারী ও সোর্সকে আটক করলে তারা বিষয়টি স্বীকার করে। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।”