মালদা নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে সীমান্ত সড়ক

লালমনিরহাট প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২৫, ০৫:০৫ পিএম
নদী ভাঙন। ছবি : প্রতিনিধি

ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষে মালদা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে ধীরে ধীরে বিলীন হচ্ছে সীমান্ত সড়ক। গত বছরের ভাঙনে বসতভিটা হারিয়েছে অন্তত ১০টি পরিবার। লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার ওই সীমান্ত সড়কটির ভাঙন ঠেকাতে জরুরি পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কটির অর্ধেকের বেশি অংশ ইতোমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এলাকাবাসী প্রায় ১৫ কিলোমিটার পথ ঘুরে বিকল্প সড়কে চলাচল করছে। ভোগান্তিতে পড়ছে স্থানীয় বাসিন্দা, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। বেশি সমস্যায় পড়েছেন রোগী ও জরুরি প্রয়োজনে চলাচলকারী লোকজন। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি)কার্যক্রম।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত বছরের ভাঙনে বগুড়াপাড়া, মালগাড়া এলাকার অন্তত ১০টি পরিবার ইতোমধ্যে বসতভিটা হারিয়েছে। এবার ভাঙন আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।  মসজিদ মন্দির, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অন্তত ৫ হাজার পরিবার ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।

এসময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে ষাটোর্ধ্ব বুলবুলি বেওয়া জানান, ভাঙনের কবলে পড়ে জমি না থাকায় দু,চালা ঘর সরিয়ে এই সীমান্ত সড়কের ওপাড়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই নিয়েছে। এখন যেভাবে সড়ক ভাঙছে এতে তিনি চরম ঝুঁকিতে আছেন। 

বগুড়াপাড়ার ভাঙন ঝুঁকিতে থাকা ইসমাইল হোসেন  (৫০) বলেন, “আমার বাড়ি-জমি সবই বিলীন হয়েছে মালদা নদীতে। বসতবাড়ির ৩টি ঘরের দুইটি গিলে খেয়েছে নদী।  এখন পরিবারসহ ঠাঁই নিয়েছি রাস্তার ধারে।” 

একই এলাকার আবুল কালাম বলেন, “বলাইরহাট-লোহাকুচি এলাকার এই সড়ক দিয়ে জেলা শহরে যাতায়াত করতাম। এবার ভাঙনে সড়ক ও ব্রিজ দুটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

ভাঙনের শুরু থেকেই একাধিকবার পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জনপ্রতিনিধিরা সড়কটি পরিদর্শন করলেও এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি অভিযোগ স্থানীয়দের।

গোড়ল ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান রমজান আলী জানান, নদী সড়ক থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূরে ছিল। গত দুই বছরের ভাঙনে সড়কের অর্ধেক বিলীন হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বড় বিপর্যয় দেখা দেবে।

[116399]

লালমনিরহাট  পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার রায় জানান, গত ৪ জুন মালদার ভাঙন প্রবণ এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। পরিস্থিতি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই কাজ দ্রুত শুরু করা হবে।