‘জিনিসপত্রের দামই বাড়ে, বাড়ে না শুধু শ্রমিকের’

লোটন আচার্য্য, সাভার প্রকাশিত: মে ১, ২০২৫, ০৫:১৯ পিএম
কাজের খোঁজে বের হয়েছেন শ্রমিকরা। ছবি : প্রতিনিধি

কাক ডাকা ভোর থেকে শ্রমজীবী মানুষের হাঁকডাক। চোখে মুখে অসহায়ত্বের ছাপ। এদিক-ওদিক তাকিয়ে শুধু ক্রেতার অপেক্ষা, এই বুঝি কেউ এসে বলবে ‘আপনি কাজে যাবেন?’

রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারে প্রতিদিন বসে শ্রম বেচাকেনার হাট। এখানে কর্নি-কোদাল-টুকরি, বাঁশের ঝুড়ি-কাস্তে হাতে নিয়ে শ্রম বিক্রির জন্য অপেক্ষা করেন দিনমজুরেরা। তবে শ্রমিকের তুলনায় হাটে ক্রেতা আসছে খুবই কম। তাই কাজ না পেয়ে অনেক শ্রমিক হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন বাড়িতে।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে সাভারের সিটি সেন্টারের সামনে বসে এই শ্রম বিক্রির হাট। ভোরের আলো ফুটতেই জমে ওঠে বেচা-বিক্রির আলোচনা। এ হাটে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রম বিক্রি করতে আসেন নানা বয়সের মানুষ। কয়েক মাস যাবত মানুষের এই হাটে শ্রমিকের সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণ। তাই কমেছে দিনমজুরদের শ্রমের দাম। অনেকে আবার শ্রম বিক্রি করতে না পেরে হতাশ হয়েই ফিরে যাচ্ছেন বাড়িতে।

পুরুষের সঙ্গে শ্রম বিক্রি করতে এসেছেন নারীরাও। ছবি : প্রতিনিধি

সিটি সেন্টারের সামনে কাজের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন শেফালী বেগম। সংবাদ প্রকাশকে তিনি বলেন, “এখন সপ্তাহে প্রতিদিন কাজ পাওয়া যায় না। আগে টাকা কম পাইলেও কাজ বেশি থাকত। জিনিসপত্রের দাম কম থাকায় ভালোই ছিলাম। কিন্তু এখন জিনিসপত্রের দাম বেশি আবার কাজকামও কম।”

রজব আলী নামের এক শ্রমিক বলেন, “পরিবার নিয়ে চলতে অনেক কষ্ট হয়। তার মধ্যে দুই সন্তানের লেখাপড়া, বাবা-মায়ের চিকিৎসার খরচ সবই আমার বহন করতে হয়। কিন্তু প্রতিদিন কাজ থাকে না। এছাড়াও কাজের ধরণের ওপর নির্ভর করে মজুরি দেয়। এখন অনেক কষ্টেই চলতে হয়।”

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, “দেশে জিনিসপত্রের দামই বাড়ে, বাড়ে না শুধু শ্রমিকের দাম।”

মাটি ফেলার কাজের জন্য শ্রমিক নিতে এসেছেন রফিক মিয়া। সংবাদ প্রকাশকে তিনি বলেন, “আমি জাহাঙ্গীরনগর আমবাগান এলাকা থেকে এসেছি। বাড়ির উঠানে মাটি ফেলব তাই তিনজন শ্রমিক নিয়েছি রোজ হিসেবে (দৈনিক মজুরি) কাজ করার জন্য।”